নিউজ ডেস্ক :
সাজনা বেগমের স্বামী নেই, মারা গেছেন ২০১৭ সালে। সংসারে ৭ জন সন্তান। দিন এনে দিনে খাওয়া এই পরিবারের একমাত্র অভিভাবক সাজনা বেগম। তিনিও এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। আয় রোজগারহীন সংসারে সন্তানরা কাজ করে যা পান তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে তাদের। কিন্তু এত বড় রোগের চিকিকৎসা কেমনে চলবে। সে চিন্তায় এখন দিশেহারা পরিবারটি।
যে পরিবারটির কথা বলছিলাম তাদের বসবাস সিলেট নগরের ৭ নং ওয়ার্ডের সুবিদবাজার এলাকায়। বনকলাপাড়া গোলাপ মিয়ার পয়েন্ট সংলগ্ন ২০৪/২ নং বাসার কলোনীর একটি কক্ষে থাকেন সাজনা বেগম। বাড়ী দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। স্বামী লাল মিয়া ছিলেন দিনমজুর। দীর্ঘদিন রোগে ভোগে মারা গেছেন ২০১৭ সালে। এরপর থেকে সাজনা বেগম কাজ করে সংসার চালাতেন। সন্তানদের লালন পালন করেছেন। বড় করেছেন, বিয়ে দিয়েছেন। তারাও দিনে আনে দিনে খান। এক কথায় পরিবারটির নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা। এরই মাঝে পাঁচ বছর আগে সাজনা বেগমের পেটে অসুখ দেখা দেয়। সাধ্য মতো নানা চিকিৎসকের কাছে যান। ওষুধ খান। কিন্তু কোনো কাজে আসেনা। এক পর্যায়ে রক্ত যেতে থাকে। তখন তাকে ওসমানী মেডিকেলে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা কালে ধরা পড়ে তার দেহে ক্যান্সার বাসা বেধেছে। তখন যেন আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ে সন্তানদের। দিশেহারা হয়ে নানা জনের কাছে ছুটেন। পরামর্শ করেন। এক পর্যায়ে ওসমানী হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহযোগি অধ্যাপক সরদার বনিউল আলমের কাছে যান। তার তত্ত্বাবধানে চিকিসা শুরু হয়। কিন্তু এ চিকিৎসায় নেমে যেন চোখের জল-ই অসহায় পরিবারটির নিত্য সঙ্গী হয়ে পড়েছে।
সাজনা বেগমের মেয়ে মমতা ও সুমি জানান, সিলেট জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ফাইরুজ তাসনিমসহ কিছু হৃদয়বান মানুষের সহায়তায় এপর্যন্ত পাঁচটি ক্যামোথেরাপী দিয়েছেন। এখন ওসমানী হাসপাতালে আরেকটি দিতে হবে। এরপর নাকি ঢাকায় গিয়ে থেরাপী দিতে হবে। তারা বলেন, এসব থেরাপীর প্রায় প্রতিটিতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা করে লাগে। এর উপর যাতায়াতসহ নানা খরচ আসে। একবার হাসপাতালে যেতেই তিনশ টাকা গাড়ি ভাড়া লাগে। কেমনে সংসার চালাবেন আর কি করে মায়ের চিকিৎসা করাবেন- তা নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটে তাদের। সুমী জানান তারা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন, মা-ও একইভাবে তাদের লালন-পালন করেছেন। যে মা তাদের জন্য এতো কিছু করেছেন সেই মায়ের জন্য কিছু করতে না পেরে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। যদি সমাজের হৃদয়বান দানশীল ব্যক্তিরা তাদের একটু একটু সহায়তা করেন তবে তারা মায়ের শেষ দিগুলোতে তাকে কিছুটা হলেও স্বস্থি দিতে পারবেন।
সাহায্যের জন্য –
জেলা লিগ্যাল এইড – 01787-011654
অথবা তাদের বাসার ঠিকানাতেও যোগাযোগ করা যাবে।
Leave a Reply