নিউজ ডেস্কঃঃ
শ্রীলঙ্কার পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের মা-বাবার স্মরণে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভ গুঁড়িয়ে দিয়েছেন সরকারবিরোধীরা। শুধু তাই নয়, দেশটির এক আইনপ্রণেতা ও সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতেও আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
অর্থনৈতিক সংকটে পর্যুদস্ত শ্রীলঙ্কায় গণবিক্ষোভ শুরুর পর আজ সরকারবিরোধীরা বিভিন্ন স্থানে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর ও হামলা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারবিরোধীদের গুলিতে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের এক আইনপ্রণেতা নিহত হয়েছেন।
সোমবার সকাল থেকেই সরকারবিরোধীরা প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় সরকারের প্রতি অনুগতরা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালালে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। রাস্তায় থাকা বাস-গাড়িতে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুর শুরু করে তারা। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মা-বাবার স্মরণে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভও গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা।
সোমবার রাতে দেশটির সাবেক মন্ত্রী জনস্টন ফার্নান্দো ও আইনপ্রণেতা সনথ নিশান্তার বাড়িতে আগুন দেয় সরকারবিরোধীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, আজ সকালে বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষকে পদত্যাগ না করার আহ্বান জানিয়ে তাঁর সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রির বিপরীতে একটি বিক্ষোভ করে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর পরই তাঁরা টেম্পল ট্রির কাছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে আহত অন্তত ১৬ জনকে কলম্বো ন্যাশনাল হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময়ই এমপি আহত হন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিত্তামবুয়া এলাকায় এমপি অমরাকীর্তিকে বহনকারী গাড়ির গতিরোধ করেন দুই ব্যক্তি। আকস্মিকভাবে তাঁরা এলোপাতাড়ি গুলি চালান। এতে এমপি গুরুতর আহত হন। তিনি পাশের একটি ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে সাধারণ জনগণকে সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে একটি টুইট করেন। এর পরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
একটানা চলমান অস্থিরতার মধ্যে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেওয়ার পর ক্ষমতায় থাকতে অনড় রাজাপক্ষে অবশেষে আজ পদত্যাগ করেন। তবে এর আগে একজন আইনপ্রণেতাসহ পাঁচজন লোক নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছে ১৯০ জন।
প্রসঙ্গত, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কা ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। জ্বালানি, খাদ্য এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহে চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকার ও আইন প্রণেতাদের জরুরি সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়ে কয়েক দিন ধরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলছে।
Leave a Reply