স্পোর্টস ডেস্কঃ
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তাসমান সাগরপাড়ের দুই প্রতিবেশী। সুপার টুয়েলভের দুই গ্রুপের রানার্সআপরা সেমিফাইনাল জিতে খেলতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে গৌরব অর্জনের ম্যাচে। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তি, যে ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
শুধু এই ম্যাচই নয়, আইসিসির প্রতিযোগিতায় দুই দল যতগুলো নকআউট ম্যাচ খেলেছে, জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।
১৯৯৬ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জিতেছিল। ১০ বছর পর ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সেমিফাইনালে মোহালিতে তারা ৩৪ রানে হারায় নিউ জিল্যান্ডকে। ২০০৯ সালে একই প্রতিযোগিতার ফাইনালে দেখা হয়েছিল দুই দলের, সেঞ্চুরিয়নে ৬ উইকেটে জিতেছিল অজিরা। আর ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ৭ উইকেটে হারায় তারা কিউইদের।
ক্যারিবিয়ানে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ার পর এটি অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল। আর কিউইদের জন্য এটি প্রথম ফাইনাল, ২০০৭ ও ২০১৬ সালে হেরে যায় তারা।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের দেখা হয়েছে ১৪ বার, যেখানে অস্ট্রেলিয়া ৯-৫ ব্যবধানে এগিয়ে।
সম্প্রতি তাদের দেখা হয় ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ মার্চের মধ্যে। নিউ জিল্যান্ড পাঁচ ম্যাচের সিরিজে স্বাগত জানায় অস্ট্রেলিয়াকে। মাউন্ট মঙ্গানুইতে সিরিজ নির্ধারণী পঞ্চম ম্যাচটি ৭ উইকেটে জিতে ৩-২ এ শেষ হাসি হাসে নিউ জিল্যান্ড।
দুবাইয়ে এই আসরে ১২ ম্যাচ হয়েছে, সেখানে কেবল একটি ম্যাচ জিতেছে প্রথমে ব্যাট করা দল আর ১১টি জিতেছে রান তাড়া করতে নামা দল। প্রথমে ব্যাট করে একমাত্র জয় পাওয়া দলটি নিউ জিল্যান্ড, ৩ নভেম্বর স্কটল্যান্ডকে ১৬ রানে হারায় তারা।
এই মাঠে ৭৪টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মধ্যে ৩৬টি জিতেছে প্রথমে ব্যাট করা দল, আর ৩৮ জয় দ্বিতীয় ব্যাটিং দলের। ২২ বারের প্রচেষ্টায় কেবল দুইবার এই গ্রাউন্ডে ১৫৫-এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের ঘটনা ঘটেছে, সবশেষটি হলো তো এই তো সেদিন- অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনাল জয়।
দুবাইয়ে এখন পর্যন্ত স্পিনারদের দাপট। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের হয়ে শাদাব খানের পারফরম্যান্স উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
দুই দলের খেলার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া যেখানে ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে খেলেছে, সেখানে নিউ জিল্যান্ড বোলিং অ্যাপ্রোচ নির্ভর। প্রতিযোগিতায় নিউ জিল্যান্ডের সব মিলিয়ে ইকোনমি রেট প্রতি ওভারে ৬.৭৫, অংশ নেওয়া ১৬ দলের মধ্যে সেরা।
ট্রেন্ট বোল্ট এই প্রতিযোগিতায় শীর্ষ সিম বোলার, ১৪.০৯ গড় ও ৬.৫৪ ইকোনমি রেট নিয়ে ১১ উইকেট তার। টিম সাউদি পেয়েছেন ৮ উইকেট, প্রতি ওভারে রান ৫.৭৫।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা ১২ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সেরা বোলার। তিনি কেবল ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার নিচে।
নিউ জিল্যান্ডের দুশ্চিন্তা হতে পারে তাদের ব্যাটিং শক্তি নিয়ে। ৮৫ শতাংশ ম্যাচই জিতেছে বেশি বাউন্ডারি মারা দল এবং চার সেমিফাইনালিস্টের মধ্যে বাউন্ডারির হার সবচেয়ে কম নিউ জিল্যান্ডের। তাদের বল প্রতি বাউন্ডারি ৭.৩২। অস্ট্রেলিয়া বাউন্ডারি মেরেছে ৫.৯১ বল প্রতি।
অস্ট্রেলিয়া নিজেদের দল বেশ গুছিয়ে নিয়েছে, তার প্রমাণ এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচের পাঁচটি খেলেছে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে। তাদের একমাত্র পরিবর্তন গত ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার টুয়েলভ ম্যাচে। মিচেল মার্শের বদলে খেলেন অ্যাস্টন অ্যাগার।
নিউ জিল্যান্ডে তাদের ১২ জন খেলোয়াড়কে ব্যবহার করেছে। টিম সেইফার্টের জায়গায় অ্যাডাম মিলনে আসার পর তারা শেষ পাঁচ ম্যাচই খেলেছে একই একাদশ নিয়ে।
কিন্তু ফাইনালে একাদশ পাল্টাতেই হচ্ছে কিউইদের। কারণ ডেভন কনওয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে আউট হওয়ার পর ব্যাটে ঘুষি দিয়ে হাত ভেঙে ফেলেছেন। তার জায়গায় ফিরে আসছেন সেইফার্ট।
Leave a Reply