নিউজ ডেস্কঃ পোল্যান্ডের সঙ্গে বেলারুশ সীমান্তে উদ্ভূত অভিবাসী সংকটের মূল হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতিউস মোরাউইকির অভিযোগ, পুতিনই এই সংকটের নেপথ্যে রয়েছেন। বেশ আগেই বেলারুশের বিরুদ্ধে অবরোধ দিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
মাতিউস মোরাউইকির অভিযোগ, ওই অবরোধের প্রতিশোধ নিতে সীমান্তে এসব অভিবাসীকে পাঠিয়েছেন বেলারুশের স্বৈরশাসক আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো। কিন্তু এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন লুকাশেঙ্কো। খবর বিবিসির।
কয়েক দিন ধরে হিমাংকের নিচে তাপমাত্রায় সীমান্তে অপেক্ষা করছেন কমপক্ষে দুই হাজার অভিবাসী। তারা বেলারুশ থেকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে চান।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতি সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পোল্যান্ডের অন্যপাড়ে সীমান্ত বেড়ার পাশে অবস্থান করছেন এসব অভিবাসী। তাদের অনেকে কাঁটাতারের বেড়া কেটে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। এখানে-ওখানে ফেলে রেখেছে গাছের গুঁড়ি। তাদের নিবৃত্ত করতে পোল্যান্ডের নিরাপত্তা রক্ষীরা কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছেন।
এসব অভিবাদের মধ্যে আছেন নারী, শিশুসহ তরুণরা। তাদের বেশির ভাগই মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার। বেলারুশ অংশে তারা তাঁবু গেড়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের একদিকে পোল্যান্ডের নিরাপত্তা রক্ষী। অন্যদিকে বেলারুশের নিরাপত্তা রক্ষী।
ফলে এসব অভিবাসীর এখন সামনে-রটছনে কোনো দিকেই যাওয়ার সুযোগ নেই, যদি না কোনো দেশ তাদের প্রতি সদয় হয়। ওদিকে সীমান্তজুড়ে রাতের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহে এই তাপমাত্রায় ওই এলাকায় বেশ কিছু মানুষ মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সীমান্ত পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতিউস মোরাউইকি। এরপর পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে তিনি অভিবাসী ঠেলে দিয়ে বেলারুশ সরকার তার দেশের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, লুকাশেঙ্কো এই যে হামলা চালিয়েছে, এর মাস্টারমাইন্ড হলো মস্কো। এর মূলহোতা প্রেসিডেন্ট পুতিন। রাশিয়া ও বেলারুশের নেতারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে।
তিনি এ সময় পরিস্থিতিকে নতুন এক ধরনের যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেন। বলেন, এতে জনগণকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে লুকাশেঙ্কো। এক্ষেত্রে পোল্যান্ডকে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। তিনি আরো বলেন, ৩০ বছরের মধ্যে এটাই প্রথম পোল্যান্ডের সীমান্তের নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
এরই মধ্যে সশস্ত্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা বৃদ্ধি করেছে পোল্যান্ড। তাদের আশঙ্কা এই পরিস্থিতিতে উস্কানি সৃষ্টি করতে পারে বেলারুশ। কয়েক মাসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া এবং লাতভিয়াতে বিপুল পরিমাণ মানুষ অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করেছে বেলারুশ থেকে।
বেলারুশের সঙ্গে সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার থেকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে লিথুয়ানিয়া। মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার কথা।
Leave a Reply