লন্ডন ডেস্কঃ
বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ৯২ বছরে পা রাখলেন। ১১ অক্টোবর তাঁর ৯১তম জন্ম দিন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী বি. চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে (প্রখ্যাত মুন্সেফ বাড়ি) মাতুলালয়ে জন্ম গ্রহণ করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, সাবেক এই রাষ্ট্রপতির ৯১তম জন্মদিন উপলক্ষে বিকল্পধারা যুক্তরাজ্য শাখা আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করে। সাবেক এই রাষ্ট্রপতির জন্মদিন উপলক্ষ্যে লন্ডনের স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও ও অন লাইন টিভিতে ১১ অক্টোবর সোমবার লন্ডন সময় দুপুর ২টায় একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়।
বিকল্পধারা বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বিকল্পধারা যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি মোহম্মদ অহিদ উদ্দিন, সহ-সভাপতি মিছবাহ জামাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, বিকল্পধারার নেতা ফয়জুল হক, আশিক চৌধুরী ও ফারুক চৌধুরী সাবেক এই রাষ্ট্রপতিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসার বি চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে স্পেকট্রাম বা অংলা রেডিও অনলাইন টিভি’র বিশেষ অনুষ্ঠানে বি চৌধুরীর জীবনের উপর আলোকপাত করেন সাবেক প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারী জাহাঙ্গীর আলম, কলকাতার বিশিষ্ট কবি নেতাজী শতবার্ষিকী মহাবিদালয়ের প্রফেসার কৃষ্ণা মিএ, বিকল্পধারা যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট আগামী নিবাচনে রেডব্রীজ কাউন্সিলের চার্চফিল্ড ওয়ার্ড থেকে লিমডেম দলীয় কাউন্সিলার প্রার্থী অহিদ উদ্দিন, স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও ও অন লাইন টিভি’র পরিচালক মিছবাহ জামাল, ফ্রেন্ডস অব ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ইউকের চেয়ারম্যান মাহমাদুর রশীদ, জয়েন্ট সেক্রেটারী মনসুর আহমেদ খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বি চৌধুরীর শত বর্ষ জীবন কামনা করা হয়।।
উল্লেখ্য, বি. চৌধুরীর পিতা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার মজিদপুর দয়হাটা গ্রামে।
বি. চৌধুরী একজন কৃতি ছাত্র। ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরী থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। সব পরীক্ষাতেই তিনি মেধা তালিকায় ছিলেন।
বি.চৌধুরী যুক্তরাজ্যের তিনটি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ লন্ডন, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত ফেলো-এফ.আর.সি.পি এবং বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফ.সি.পি.এস। তিনি রোগ বিজ্ঞানে দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং রোগ বিজ্ঞান বিষয়ে টিভি অনুষ্ঠানের রেকর্ডঅর্জনকারী উপস্থাপক। সফল পার্লামেন্টেরিয়ান বি. চৌধুরী জাতিসংঘে তিনবার বক্তৃতা দেন। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বহু গ্রন্থের প্রণেতা।
বি. চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং অক্টোরব থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন।
বি. চৌধুরী ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামের একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁর সহধর্মীনির নাম হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী। অধ্যাপক চৌধুরী ২ মেয়ে এবং এক ছেলের জনক। তাঁর বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী ব্যারিস্টার। ছোট মেয়ে শায়লা চৌধুরী পেশায় চিকিৎসক এবং ঢাকার উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন। একমাত্র ছেলে মাহী. বি. চৌধুরী রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।
Leave a Reply