নিউজ ডেস্কঃ
সিলেট মহানগর বিএনপির ২৯ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত মুখের অনেক নেতা স্থান পাননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁদের ‘ত্যাগী’ নেতা আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ চলছিল। কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার এক সপ্তাহের মাথায় ‘ত্যাগী’ নেতা হিসেবে পরিচিত সাতজনকে আহ্বায়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও তিনজন সদস্যপদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মিফতাহ সিদ্দিকী আজ বুধবার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ৩ ও ৫ অক্টোবর মহাসচিব স্বাক্ষরিত কেন্দ্র থেকে পাঠানো পৃথক দুটি চিঠিতে সাতজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই চিঠি পেয়ে আজ বুধবার তিনি কেন্দ্রে গিয়ে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।বিজ্ঞাপনবিজ্ঞাপন
যুগ্ম আহ্বায়ক পদে নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া চারজন হচ্ছেন বিগত কমিটির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করা সালেহ আহমদ খসরু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মইনুদ্দিন সোহেল ও জাতীয়তাবাদী যুবদলের মহানগরের আহ্বায়ক নজিবুর রহমান। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য করা হয়েছে ড্যাব সিলেটের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, ছাত্রদলের সাবেক নেতা মাহবুব চৌধুরী ও সৈয়দ সাফেক মাহবুবকে।
২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বিলুপ্ত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকিকে আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা মিফতাহ সিদ্দিকী সদস্যসচিব মনোনীত করা হয়। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে দুই বছর মেয়াদি মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।বিজ্ঞাপন
২৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে নয়জন যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। নতুন করে আরও চারজনকে অন্তর্ভুক্ত করায় এখন যুগ্ম আহ্বায়ক ১৩ জন ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসংখ্যা ২০ জন হলো।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর থেকে সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মহানগর বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে হেরে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিয়ে চলছিল সাংগঠনিক কার্যক্রম।
গত তিন বছরে তিনবার বদল হয়েছে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। বদরুজ্জামান যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার পর যুগ্ম সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। কয়েক দিন পর পারিবারিক কাজে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ায় শামীম সিদ্দিকী ভারপ্রাপ্ত হন। পরবর্তী সময়ে তিনিও যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা ও নেতৃত্বে শূন্যতা দেখা দেয়। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও বিদেশ পাড়ি দেওয়া নেতাদের মধ্যে একমাত্র আজমল বখত চৌধুরী নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা আজমল বখত গতকাল মঙ্গলবার রাতে বলেন, পারিবারিক ও করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। আজমল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ৩৫টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় হত্যার অভিযোগে মিথ্যা মামলাসহ ২২টি মামলা আছে। দলের জন্য এ রকম ত্যাগ স্বীকার করা দ্বিতীয় ব্যক্তি পাওয়া যাবে না। আহ্বায়ক কমিটিতে আমার নাম না দেখে তৃণমূলে ক্ষোভ ছড়ায়।’ মূলত তাঁকে নিয়ে ত্যাগীদের বাদ পড়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ায় বলে আজমল দাবি করেন। বিষয়টি অনুধাবন করে তাঁকে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে অন্তর্ভুক্ত করায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
Leave a Reply