নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে বাসার ভিতর কুপিয়ে হত্যা মামলায় রায়ে ছয় জনকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়া, আকরাম হোসেন, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ। এছাড়া সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
এদিন দুপুর ১২টা ৮মিনিটে বিচারক এজলাসে হাজির হন। এরপর তিনি মামলার রায় ঘোষণা করেন। এর আগে গত ২৩ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক মজিবুর রহমান মামলার রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেছিলেন।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডে জুলহাজের বাসায় ঢুকে তাকেসহ তার বন্ধু তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ৩৫ বছর বয়সী জুলহাজ মান্নান সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী) ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনির খালাতো ভাই। এছাড়া তার ২৬ বছর বয়সী বন্ধু তনয় লোকনাট্য দলের কর্মী ছিলেন। তারা দুজনেই দেশে সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছিলেন। এ কারণে উগ্রবাদীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানা যায়। পরেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার ভাষ্যমতে আসামিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য।
এরপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১২ মে জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম। পরের বছর ১৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৩ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। অন্যদিকে আইনজীবীরা আসামিদের নির্দোষ দাবি করে তাদের খালাস চান।
উল্লেখ্য, আসামিদের মধ্যে সায়মন, আরাফাত, আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ কারাগারে আছেন। আর বাকি চার আসামি শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। এছাড়া জিয়া, মোজাম্মেল, আরাফাত ও আকরাম বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
Leave a Reply