স্পোর্টস ডেস্কঃ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিক বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়াকে টানা দ্বিতীয়বার হারিয়ে সিরিজ জয়ের দৌড়ে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। এই জয়ে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে থাকলো বাংলাদেশ। শুক্রবার তৃতীয় ম্যাচ জিতলেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে টাইগারদের। সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়ে শুভসূচনা করে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচেও টস-ভাগ্য ছিল না মাহমুদউল্লাহর। আগের ম্যাচে টস জিতে বোলিং নেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। এবার ব্যাটিং। দুই সিরিজ মিলিয়ে টানা পাঁচ টসে হারলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে অজিদের সিদ্ধান্তটি সঠিক হতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথমে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
১২২ রানের লক্ষ্যে শুরুটা অবশ্য ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। আগের ম্যাচের মতো এদিনও ব্যর্থ হন সৌম্য সরকার। মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হন তিনি। রানের খাতায় তথনও শূন্য। পরের ওভারেই জস হ্যাজেলউডের বলে ৯ রান করে নাঈম শেখ বোল্ড হন।
ম্যাচের ৭ম ওভারে অ্যাস্টন অ্যাগারের এলবির আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেন সাকিব। এতে জীবন পান তিনি। তখন ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব। অ্যাগারের ওভারে দুইবার ক্যাচ আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান মেহেদী।
এরপর সাকিব-মেহেদীর জুটিতে রান রেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান তুলছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ৫৮ রানে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে লাইন মিস করে বোল্ড হন সাকিব। মেহেদী হাসানের সঙ্গে ৩৭ রানের জুটিও ভাঙে এতে। ১৭ বলে ২৬ করেন সাকিব।
সাকিবের বিদায়ের পর ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নামেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। অ্যাশটন অ্যাগারের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে শরীর থেকে দূরে ব্যাট চালান তিনি। এতে বোল্ড হয়ে শূন্য হাতে ফেরেন সাজঘরে।
এরপর দুইবার জীবন পাওয়া মেহেদীও ফেরেন ২৪ বলে ২৩ রান করে। অ্যাডাম জাম্পাকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গেলে বল মিস করেন তিনি। আর বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। বাকি কাজটা সেরে ফেলেন ম্যাথু ওয়েড।
বিপদের সময় আবারও বাংলাদেশের হয়ে হাল ধরেন আফিফ হোসেন৷ শুরুতেই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। এরপর সোহানকে নিয়ে বড় জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। দু’জনের অসাধারণ জুটিতে জয়ের দিকে এগুতে থাকে টাইগাররা। দু’জনের অপরাজিত ৫৬ রানের জুটিতেই ৫ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। ৩১ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন আফিফ। নুরুল করেছেন ২১ বলে ২২ রান।
এর আগে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংসের সূচনা করতে ব্যাটিংয়ে নামেন জস ফিলিপ-অ্যালেক্স ক্যারি। প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুতেই দলকে সাফল্য এনে দেন মেহেদী। তৃতীয় ওভারে এসে ক্যারিকে সাজঘরে পাঠান এই স্পিনার। তার বলে মিড অনে ক্যাচ নেন নাসুম। দুই চারে ১১ বলে ১১ রান করেন ক্যারি।
দলীয় ৩১ রানে মোস্তাফিজের স্লোয়ারে বোল্ড হয়ে ফেরেন জস ফিলিপ। কাটার মাষ্টারের বলটি বুঝতেই পারেননি ফিলিপ। খেলতে চেয়েছিলেন লেগ সাইডে, কিন্তু ব্যাটে-বল এক করতে পারেননি। ফিজের স্লোয়ার ভেঙে দেয় ফিলিপের লেগ স্ট্যাম্প। ১৪ বলে ১০ রান করেন ফিলিপ।
ধীরগতিতে শুরুর পর স্বাগতিকদের টানেন মিচেল মার্শ ও মইজেস হেনরিকস। তাদের ব্যাটে সিরিজে প্রথম পঞ্চাশ রানের জুটি পায় অস্ট্রেলিয়া। ৪৭ বলে আসে তাদের জুটির ফিফটি।
১৫তম ওভারে বোলিং করতে এসে দ্বিতীয় বলে মইসিস হেনরিকসকে আর্ম ডেলিভারিতে বোল্ড করে যখন প্যাভিলিয়নে পাঠাচ্ছেন সাকিব, ততক্ষণে মার্শ-হেনরিকস জুটি করে ফেলেছে ৫২ বলে ৫৭ রান। ২৫ বলে ৩০ রান করেন হেনরিকস।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরান পেসার শরিফুল। ৪২ বলে ৪৫ রান করে ফেরেন মার্শ।
দলীয় ১০৩ রানে অজি শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। ম্যাথু ওয়েডের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেন কাটার মাষ্টার। ৭ বলে ৪ রান করে ফিরতে হল তাকে। পরের বলেই খালি হাতে ফেরান অ্যাস্টন অ্যাগারকে।
টার্নারকে তেমন কিছু করতে দেননি শরিফুল। ১৯তম ওভারে শরিফুল দেন মাত্র ৫ রান। টাইগার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১২১ রানেই থামে অজিরা।
বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করলেন শরিফুল। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব ও মেহেদী।
Leave a Reply