শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
আজকের সংবাদ শিরোনাম :
চীনের ভ্যাকসিন সিনোভ্যাককে অনুমোদন দিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

চীনের ভ্যাকসিন সিনোভ্যাককে অনুমোদন দিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

নিউজ ডেস্কঃ  চীনের দ্বিতীয় করোনার টিকা হিসেবে সিনোভ্যাক কোম্পানির টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মঙ্গলবার রাতে এই খবর জানিয়ে বিবিসি বলেছে, এই অনুমোদনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে টিকা বিতরণের উদ্যোগ কোভ্যাক্সে চীনের এই টিকা ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হলো।

এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে সিনোভ্যাকের টিকা। ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের দুই ডোজের এই টিকা দেওয়া হয়। প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পর এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়ে থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার অর্থ হলো টিকাটি নিরাপত্তা, কার্যকারিতা ও প্রক্রিয়াজাতকরণে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সিনোভ্যাকের টিকাগ্রহীতাদের অর্ধেকের বেশি মানুষ উপসর্গযুক্ত করোনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আর শতভাগ গুরুতর অসুস্থতা ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থা হওয়া থেকে মুক্ত হয়েছেন।

এর আগে গত ৭ মে চীনের আরেক কোম্পানি সিনোফার্মের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরে উদ্ভাবিত করোনার টিকাগুলোর মধ্যে ওই টিকাই প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছিল। তার আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না ও জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনার টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল ডব্লিউএইচও।

চীনের এই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন কোভ্যাক্স উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত সরকার সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা কোভিশিল্ডের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স।

ভারত টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিশ্বের ৯১টি দেশের ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথান।

এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌম্য স্বামীনাথান বলেছেন, আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশসহ এসব দেশে টিকার মজুত তলানিতে যাওয়ায় করোনার ভারতীয় ধরনসহ নতুন নতুন ধরনে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

সৌম্য স্বামীনাথান বলেছিলেন, ভারত থেকে করোনার টিকা রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে আফ্রিকার দেশগুলো। এ মহাদেশের অনেক দেশ মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের কম মানুষকে করোনার টিকা দিতে পেরেছে। এভাবে চলতে থাকলে কিছু দেশ স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে। অপর দিকে অনেক দেশকে করোনার দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ঢেউয়ে ভুগতে থাকবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক মারিয়াঞ্জেলা সিমাও বলেছেন, বিশ্বজুড়ে টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে যে বৈষম্য দেখা দিয়েছে তা দূর করার জন্য অনেকগুলো কোভিড–১৯ টিকার জরুরি প্রয়োজন।

সৌম্য স্বামীনাথান বলেন, ‘আমরা টিকা উৎপাদনকারীদের প্রতি কোভ্যাক্সে অংশ নিতে অনুরোধ করছি, তাদের জ্ঞান ও তথ্য বিনিময় এবং মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সিনোভ্যাকের এই টিকা চীন ছাড়াও এরই মধ্যে চিলি, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে দেওয়া হয়েছে।

সিনোভ্যাক বলছে, মে মাসের শেষ নাগাদ তারা দেশ–বিদেশে ৬০ কোটি ডোজের বেশি টিকা সরবরাহ করেছে। তার মধ্যে ৪৩ কোটির বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়ে গেছে।

সিনোভ্যাকের টিকার প্রধান সুবিধাগুলোর একটি হচ্ছে, এটি ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়। এর অর্থ সিনোভ্যাকের টিকাটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যবহারের জন্য বেশি উপযোগী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রধানেরা করোনা মহামারিতে লাগাম টানতে ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের জন্য তহবিল চাওয়ার পর সিনোভ্যাকের টিকার জরুরি অনুমোদন এল।

এএফপির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্বনেতাদের প্রতি করোনাভাইরাস টিকার সমবণ্টনে নতুন প্রতিশ্রুতির আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বের চারটি বড় সংস্থার প্রধানেরা এ আহ্বান জানান।

ওয়াশিংটন পোস্টে এক যৌথ লেখায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়েলা বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

তাঁদের নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘এটা স্পষ্ট, মহামারি থেকে স্বাস্থ্যসংকটের অবসান ছাড়া কোনো পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তাই টিকার সুবিধা পাওয়াই মূল বিষয়। মহামারি শেষ করা সম্ভব। এ জন্য এখন বৈশ্বিক পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তাঁরা ধনী দেশগুলোর প্রতি দ্রুত দরিদ্র দেশগুলোর জন্য টিকা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া টিকা উৎপাদন, অক্সিজেন সরবরাহ, কোভিড চিকিৎসা, টিকার সুষম বণ্টনের জন্য অর্থ বিনিয়োগের আহ্বানও জানিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

June 2021
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24