নিউজ ডেস্কঃ আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা’ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে। আগের কয়েক অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ ও ব্যয়ের হিসাব থেকে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। আগামী ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ‘জীবন ও জীবিকার প্রাধান্য, আগামীর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাজেট উপস্থাপন করবেন।
আগামী অর্থবছরে অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাতে এক হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল তিন হাজার কোটি টাকা। সেটি বাড়িয়ে চার হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। মূলত করোনাপরবর্তী বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয় দুই হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে একই পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হলেও ব্যয় হয়েছে মাত্র ২৯ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একই পরিমাণ বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় মাত্র ৬০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় হয়েছে মাত্র দুই কোটি টাকা।
দেশে দৈবদুর্বিপাকজনিত কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে এ খাত থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে হঠাৎ টাকার দরকার হলে এ খাত থেকে অর্থের সংস্থান করা হয়ে থাকে। যেমন ২০১৯ সালে রোজ গার্ডেন কেনার অর্থও এ খাত থেকে দেওয়া হয়েছিল। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশে করোনা মহামারী বিদ্যমান। স্বাস্থ্য সরঞ্জাম, টিকা ক্রয়ের জন্য এই খাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে এবং আগামীতে অর্থের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় হঠাৎ করে যদি কোনো অর্থের প্রয়োজন হয়, সে জন্য এখানে বরাদ্দ এক হাজার কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত’ নামে পরিচিত এ খাত থেকে গত কয়েক অর্থবছরে তেমন অর্থ ব্যয় না হলেও চলতি অর্থবছরে এ খাতের প্রায় পুরো
অর্থই ব্যয় হয়েছে। ব্যয়িত অর্থের বেশিরভাগই গেছে করোনার কারণে স্বাস্থ্য ও প্রণোদনা খাতে।
জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মানবসৃষ্ট দুর্যোগ, রাজনৈতিক কিংবা রাষ্ট্রীয় অনাকাক্সিক্ষত যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতি অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এ খাতে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়। বাংলাদেশে হঠাৎ সৃষ্ট যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ‘অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত’ নামে প্রায় প্রতি অর্থবছরই বিশেষ বরাদ্দ রাখে। চলতি অর্থবছর এ খাতে যে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা আছে তার থেকে করোনা মোকাবিলা তথা স্বাস্থ্যসামগ্রী, টিকাসংক্রান্তসহ নানা কাজে এর বেশিরভাগ অর্থ ব্যয় হয়েছে। এ ছাড়া সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, এ খাত থেকে তার সুদ ভর্তুকি বাবদ খরচ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর শেষ হতে এখনো কিছু দিন বাকি। অর্থবছর শেষ হলে কোথায় কত টাকা খরচ হয়েছে, তার পুরো হিসাব করবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
Leave a Reply