নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও দেশে টিকা নেওয়ার সুযোগ হচ্ছে না। তাই লাতিন আমেরিকার অনেক দেশের নাগরিকেরা ছুটছেন যুক্তরাষ্ট্রে। পর্যটক হিসেবে গিয়ে বিনা মূল্যে টিকা পাচ্ছেন তাঁরা।
সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামি সমুদ্রসৈকতের একটি অস্থায়ী টিকা দান বুথে পর্যটক ভিসায় আসা বিদেশি নাগরিকদের টিকা নেওয়ার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়, গত রোববার দুপুরের পর সৈকতে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন একদল পর্যটক। ঘামে ভিজে উঠছিলেন তাঁরা। টিকার জন্য একে একে অনলাইন সিস্টেমে নিবন্ধিত হন। তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতির কাগজ তাঁদের দরকার হচ্ছিল না। নিবন্ধিত হওয়ার কিছুক্ষণ পর বিনা মূল্যে জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা নেন তাঁরা। টিকা নেওয়ার তথ্যসংবলিত একটি কার্ডও তাঁদের ধরিয়ে দেওয়া হয়।
ইকুয়েডর, এল সালভাদর, ভেনেজুয়েলাসহ লাতিন আমেরিকার সব জায়গা থেকে মানুষ টিকা নিতে আসছেন। এসব দেশে টিকার সংকট এবং টিকাদান কর্মসূচির ধীরগতির কারণে টিকা পাচ্ছেন না বহু মানুষ।
গত শনিবার হন্ডুরাস থেকে আসেন মারিয়া বোনিলা। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমার দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু শিগগিরই সেখানে আমাদের টিকা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
টিকা নিতে বয়স্ক বাবা-মাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন ৪০ বছর বয়সী এই নারী। মাস্ক পরে তিনজনই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন টিকা নিতে। বোনিলা বলেন, ‘দেশের বাইরেই সমাধান খুঁজতে হলো।’
গত শুক্রবার মেক্সিকো থেকে এসেছেন ৫০ বছর বয়সী ব্লানসা ডায়াজ। তিনিও বললেন একই কথা। ব্লানসা ডায়াজ জানান, তাঁদের দেশে সবে বয়স্ক লোকদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে টিকা নিতে লাতিন আমেরিকার মানুষ উড়ে আসতে থাকায় বেড়ে গেছে বিমানের টিকিটের দাম। স্বাভাবিক সময়ে বুয়েনস এইরেস থেকে মিয়ামির টিকিটের দাম পড়ে এক হাজার ডলার, সেটি এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ডলার।
মিয়ামি বিচ সিটি কমিশনার ডেভিড রিচার্ডসন এই টিকাদান কার্যক্রমের তদারক করছেন। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের মার্কিন সরকারের উচিত যত বেশি সম্ভব মানুষকে সহায়তা করা। আমার উদ্বেগ বিষয় একটাই, শুধু যাঁরা বিমানের টিকিট কিনতে পারছেন, তাঁরাই কেবল টিকা নিতে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারছেন।’
গতকাল রোববার মিয়ামি সৈকতের বুথ থেকে ১৭৫ জনকে টিকা দেওয়া হয়। তাঁদের সবাইকে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয়েছে। কারণ, এক ডোজের টিকা হওয়ায় এটার প্রতিই আগ্রহ বেশি পর্যটকদের।
Leave a Reply