শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
আজকের সংবাদ শিরোনাম :
এসএসসি-এইচএসসিতে এবারও কি অটোপাস হবার সম্ভাবনা

এসএসসি-এইচএসসিতে এবারও কি অটোপাস হবার সম্ভাবনা

নিউজ ডেস্কঃ  চলতি ২০২১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খোলা যাবে সেটাই নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে আগামী ২২ মে পর্যন্ত। এমনকি সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাসহ ১৪ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্কুল-কলেজ খোলা সম্ভব না হলে এসএসসির জন্য ৬০ দিন ও এইচএসসির ৮৪ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়িয়ে শেষ করা সম্ভব হবে না। সিলেবাস শেষ না হলে আয়োজন করা যাবে না এই দুই বড় পাবলিক পরীক্ষা। তাই গত বছরের মতো এবারও অটোপাস দিয়ে সনদ দেয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষা আয়োজন করতে শিক্ষা বোর্ডগুলো সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণে আজ  ১ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল ও ফি’সহ ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ফরম পূরণের সময় ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর স্কুলে নির্বাচনী পরীক্ষা ছাড়াই নিবন্ধনভুক্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছেন।

অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষা নিতে প্রশ্নপত্র নির্বাচন ও মডারেশন কাজ চূড়ান্ত করে তা ছাপাতে বিজি প্রেসে (সরকারি মুদ্রণালয়) পাঠানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শেষ হলে প্রশ্ন ছাপানোর কাজ শেষ করা হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনে সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করেছি। আগামী জুন-জুলাইকে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রশ্নপত্র তৈরিসহ সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে রাখা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে।

জানা গেছে, এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মোট এক লাখ ৩৮ হাজার ৯০৪টি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। অন্যান্য শিক্ষা বোর্ড থেকেও পরীক্ষা কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। স্বাস্ব্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার সারাদেশে কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে ৫০ শতাংশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, দেশে করোনা পরিস্থিতি যেভাবে বাড়ছে তাতে চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তবে এসব পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে। সিলেবাস শেষ না হলে এ দুই পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে না। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশে এসএসসির প্রায় ২৩ লাখ শিক্ষার্থীর একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়া অসম্ভব কর্মযজ্ঞ।

ওই কর্মকর্তারা বলেন, যদি চার বা পাঁচ মাসের মধ্যেও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সে ক্ষেত্রে মোট উত্তরপত্রের ৫০ শতাংশ কমানো হতে পারে। পরীক্ষার জন্য তিন ঘণ্টা সময়ের বদলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা করে পরীক্ষা নেয়ারও বিকল্প পরিকল্পনা চিন্তা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

করোনার কারণে চলতি বছর সময় পিছিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা আগামী জুন এবং এইচএসসি পরীক্ষা আগস্ট মাসে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেজন্য এসএসসির ৬০ দিন ও এইচএসসির ৮৪ দিন ক্লাস ধরে পরিমার্জিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও প্রকাশ করে শিক্ষাবোর্ড।

তবে, সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ২৪ মে’র পর খোলা হবে, এমন ঘোষণার পর এ দুটি পরীক্ষা জুন ও আগস্টে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।

শিক্ষাবোর্ড ও এনসিটিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে, এমনটি ধরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা জুন-আগস্টে নেয়ার ব্যাপারে ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু ছুটি ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। করোনার সংক্রমণের কারণে এ সময়ের পরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কি-না, তা অনিশ্চিত। তাই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করা সম্ভব না হলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে না। সেজন্য পরিস্থিতি তৈরি হলে অটোপাসে সনদ বিতরণ করতে হতে পারে।

অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, আগামী ১৫ দিন পর এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ কার্যক্রম শুরু করতে শিক্ষা বোর্ডগুলো থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। কলেজে নির্বাচনী পরীক্ষা না হওয়ায় সারাদেশে নিবন্ধন করা প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবে।

তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা নিতে আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসকে কেন্দ্র করে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে প্রশ্নপত্র তৈরি ও ছাপাসহ সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। আমরা সেসব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হলে পরীক্ষা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেয়া হবে।

তবে এখন যে পরিস্থিতি, তাতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন আন্তঃশিক্ষা সমন্বয়ক বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।

তিনি বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা আয়োজনে আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই সপ্তাহ থেকেই এসএসসির ফরম পূরণ শুরু। সেটি শেষ হলে পরবর্তীতে এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে এসএসসির জন্য তিন ঘণ্টা সময়ে ১০০ নম্বরে তত্ত্বীয় ও বহুনির্বাচনী পরীক্ষার জন্য প্রশ্নপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। এইচএসসির প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রেসে পাঠানো হবে।

নেহাল আহমেদ আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। সিলেবাস পড়ানো সম্ভব না হলে এ পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে না। তবে প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। আগামী ২৩ মে’র মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পাঠদান শুরু করা হবে। নতুবা আগের বছরের মতো বিকল্প পথে চিন্তা করতে হবে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি খুললে সম্ভব ছিল। এখন যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে বিলম্ব হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যাবে। কারণ শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, না পড়িয়ে পরীক্ষা নেয়া হবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

April 2021
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24