নিউজ ডেস্কঃ পৃথিবীতে এমন অনেক শিশু আছে যারা বন-জঙ্গলে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে উঠছে। এক্ষেত্রে পিতা-মাতা কিংবা অন্য মানুষের সংস্পর্শ পাচ্ছে না তারা। বন্য প্রাণীদের সংস্পর্শে থেকেই বড় হচ্ছে এই শিশুগুলো। ফলে প্রাণীদের ভাষায় কথা বলছে, তাদের আচার-আচরণগুলো আয়ত্ব করছে। এমনকি মানবিক গুণাবলী তাদের মাঝ থেকে সম্পূর্ণরুপে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আপনাদের এমন কয়েকজন শিশুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবো। যারা ছোটবেলায় পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন কিংবা হারিয়ে গিয়ে বন-জঙ্গলে প্রাণীদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। পাঁচ পর্বের ধারাবাহিকে আজ থাকছে প্রথম পর্ব।
অক্সানা মালায়া: ইউক্রেনের নাগরিক এই মেয়ে জন্মের পর থেকেই পিতা-মাতার দ্বারা অবহেলার শিকার হয়। তার ঠিকভাবে যত্ন নেয়া হতো না এবং সবসময়ই খারাপ আচরণের শিকার হতে হয়েছে। মাত্র তিন বছর বয়সেই একদিন রাতে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। তখন সে খানিক উষ্ণতা ও আশ্রয়ের খোঁজে পার্শ্ববর্তী একটি কুকুরের আস্থাবলে চলে যায়। কুকুরগুলোও তাকে সহজেই আপন করে নেয়। ৮ বছর বয়স পর্যন্ত এই শিশু কুকুরদের সাথেই সময় কাটায়। ফলশ্রুতিতে মানুষের সকল গুণাবলী ভুলে গিয়ে কুকুরের আচার-ব্যবহার আয়ত্ব করে ফেলে এবং সেই অনুযায়ী চলাফেরা করতো। পরবর্তীতে তাকে মানবিক আশ্রয়ে নিয়ে যান স্বেচ্ছাসেবীরা।
রাশিয়ার পাখি বালক: রাশিয়ার ৭ বছর বয়সী এক বালক ছোটবেলা থেকেই তার পরিবারের দ্বারা অবহেলার শিকার হয়েছে। তার মায়ের একটি পাখিঘর ছিল। নিজ সন্তানের থেকেও সেখানে থাকা পাখিদের বেশি যত্ন নিতেন মা। সন্তানকে কেবল খাওয়াতেন ও প্রাথমিক চাহিদাগুলো পূরণ করতেন। কিন্তু কখনো মানুষের ভাষা শেখাতে চেষ্টা করেননি। ফলে ছেলেটি পাখিদের সাথে সারাক্ষণ সময় কাটাতো এবং একটা সময় পাখির ভাষাতেই কিচিরমিচির করে কথা বলা শুরু করে। পরবর্তীতে তাকে মানবিক আশ্রয়ে নিয়ে যান স্বেচ্ছাসেবীরা।
নেকড়ে কন্যা কমলা ও আমালা: ভারতীয় নেকড়ে কন্যা নামে পরিচিত দুই বোন কমলা ও আমালা। তবে তারা আপন বোন নয়। ১৯২০ সালে তাদের একদল নেকড়ের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। সে সময় তাদের মাঝে কোনো ধরনের মানবিক গুণাবলী ছিল না। কথাবার্তা, আচার-ব্যবহার সবই ছিল নেকড়েদের মতো। এক ধর্মীয় গুরু ও তার স্ত্রী এই দুই মেয়েকে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে এনে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছোট মেয়েটি কিছুদিনই পরই মারা যায়। আর বড় মেয়েটি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
Leave a Reply