ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করার জন্য বনগাঁ থেকে ছয়ঘরিয়া পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে। আন্দোলনের কারণে চালু হওয়ার ২ দিন পর পেট্রাপোল বন্দর থেকে বেনাপোল বন্দরে পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার (৩ মে) দুপুর থেকে রপ্তানি বন্ধ হয়। এর আগে করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ৪১ দিন বন্ধ থাকার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়।
ভারতের পশ্চিম বাংলা রাজ্য সরকারের (তৃণমূল কংগ্রেস মমতাপন্থী) সমর্থকদের দাবি ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি হলে ওই ট্রাকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে করোনা ভারতে আসতে পারে। চালু হওয়ার ২দিনে ভারত থেকে বাংলাদেশে ১৫ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে ভারত সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় ২১ মার্চ বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৪১ দিন বন্ধ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার দিকে বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি শুরু হয়। পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল পার্কিং থেকে পণ্য বোঝাই ভারতীয় ট্রাক নোম্যান্সল্যান্ডে আসলে সেখান থেকে বাংলাদেশী ট্রাকে পণ্য আনলোড করে বাংলাদেশে আনা হয়। পণ্য বোঝাই ট্রাক নোম্যন্সল্যান্ডে আসলে সেখানে উভয় দেশের পক্ষ থেকে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় উভয় দেশের ট্রাকে। তবে কাজগপত্র লেনদেন ও লোড-আনলোডে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা হয়নি। ২দিনে ভারত থেকে ১৫ ট্রাক পাট বীজ, মেস্তা বীজ ও ভুট্টা বীজ আমদানি হয়।
এদিকে বনগাঁ উত্তরের সাবেক এমএলএ গোপাল সেন ও বনগাঁ পৌর সভার মেয়র শংকর আঢ্য ডাকু পণ্য রপ্তানিতে বিরোধিতা করে কালিতলা পার্কিং থেকে কোন পণ্য বোঝাই ট্রাক ছাড়েনি। সাধারণ জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আন্দোলন শুরু করে তারা। কালিতলা পার্কিং এ বর্তমানে ১৯৮৩ টি বিভিন্ন ধরণের ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। এসব ট্রাক থেকে বনগাঁ পৌরসভা প্রতিদিন ছোট গাড়ি ৫০ টাকা, ৬ চাকা গাড়ি ৮০ টাকা, ১০ চাকা গাড়ি ১২০ টাকা ও ট্রেলার ১৬০ টাকা হারে পার্কিং চার্জ আদায় করে থাকে।
ইন্দ বাংলা চেম্বার অব কমার্সের সাব কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, বেনাপোল- পেট্রাপোল বন্দরে করোনার কারণে দীর্ঘ ৪১ দিন বন্ধ থাকার পর দু’দেশের উপরিমহলের নির্দেশে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি চালু করা হয়।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ এসোসিয়েশন সা. সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, সরকারি ও কাস্টমসের পক্ষ থেকে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করা হয়নি। তবে, রফতানি বাণিজ্য চালু থাকলে ট্রাক ড্রাইভারদের মাধ্যমে করোনা ছড়াতে পারে, এমন অজুহাতে তৃণমূল কংগ্রেসের বনগাঁ উত্তরের সাবেক এমএলএ গোপাল সেন ও পৌর মেয়র শংকর আঢ্য ডাকু জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আন্দোলন করে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ম্যানেজার শুভজিত মণ্ডল বলেন, সরকারী ভাবে পেট্রাপোল বন্দর চালু আছে। কিন্তু কিছু সাধারণ জনগণ করোনা সংক্রমণের আশংকায় বনগাঁয় আন্দোলন করায় পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা খবর রাখছি পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার কাজ হবে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, ভারত থেকে ২ দিনে ১৫ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। নোম্যান্সল্যান্ডে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধিবিধান মেনেই লোড-আনলোড করা হয়েছে। ভারতে জনগণের আন্দোলনের জন্য রোববার কোন পণ্য আমদানি হয়নি। পেট্রাপোল বন্দর পণ্য দিলে বেনাপোল বন্দরের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।
Leave a Reply