মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
ইতালিতে শর্ত দিয়ে লকডাউন উঠছে সোমবার

ইতালিতে শর্ত দিয়ে লকডাউন উঠছে সোমবার

ইতালিতে ৫৩ দিন পর আগামীকাল সোমবার থেকে উঠে যাচ্ছে লকডাউন। দেশব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশটির প্রায় সাড়ে ৬ কোটি নাগরিক সোমবার থেকে বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
একই সঙ্গে আগামীকাল থেকে সীমিত আকারে ইতালির আল-ইতালিয়া ফ্লাইট চালু হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ইতালিগামী ফ্লাইট মে মাসের শেষে বা জুনের প্রথম দিকে চালু হতে পারে বলে রোমের ট্রাভেল এজেন্সিগুলো আভাস দিয়েছে। তবে তারা জানিয়েছে, ফ্লাইট চালুর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে বাংলাদেশের লকডাউন তথা করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উপর।
এ বিষয়ে ইতালিতে প্রবাসীদের জনপ্রিয় ট্রাভেল এজেন্সি ‘পপুলার ট্রাভেলস’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. শাহাদাত হোসাইন রাজু সমকালকে জানান, তুর্কি এয়ারলাইন্সের অনলাইনে মে মাসের শেষ দিকে টিকিট ওপেন দেখাচ্ছে। রোম থেকে কাতার এয়ারলাইন্স এখনও ফ্লাইট পরিচালনা করছে, তবে সেটি বাংলাদেশের সঙ্গে নয়। বাংলাদেশে লকডাউন চলমান থাকায় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে, ঢাকা থেকে ইতালিগামী ফ্লাইট কবে চালু হবে। হতে পারে সেটি মে মাসের শেষ দিকে বা জুনে মাসের প্রথম দিকে হতে পারে। নির্ভর করছে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি তথা লকডাউন উঠে যাওয়ার ওপর।
এদিকে ইতালিতে লকডাউন শিথিল করা হলেও বেশকিছু ক্ষেত্রে শর্তজুড়ে দেওয়া হয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে, বাইরে বের হলে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষকে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানাতে হবে। আর অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সের নাগরিকরা বৈধ অভিভাবকের সঙ্গে বের হতে পারবে। এক শহর থেকে অন্য শহরে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও কোনো নিষেএটিকে করোনা পরিস্থিতির দ্বিতীয় ধাপ বলছে সরকার। এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যাবে। তবে সেটা বাবা-মা, স্ত্রী-স্বামী বা ভাই-বোন হতে হবে। নাতি-নাতনিরা দাদা-দাদী, নানা-নানীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দূরত্ব মেনে সাক্ষাৎ করতে পারবে। অবিবাহিত জুটিদের যারা এখনও একত্রে বসবাস করেন না, তারা একে-অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
তবে পারিবারিক বড় অনুষ্ঠান অথবা পুণর্মিলনী করা যাবে না। খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়, চিকিৎসকের সাক্ষাৎ এবং ফার্মেসিতে যাওয়া যাবে। কুকুর নিয়ে বের হওয়া ও ব্যায়াম করা যাবে। গণপরিবহনে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করতে হবে। কোনো নাগরিক নিজ শহরের বাইরে অন্যত্র অবস্থান করে থাকলে নিজ শহরে ফিরতে পারবেন। এছাড়া জরুরি চাকরি, স্বাস্থ্যগত এবং অন্যান্য জরুরি কারণে অন্য শহরে যাওয়া যাবে।
প্রত্যেক নাগরিকের নিজ শহরে কারণ ছাড়া স্বাধীনভাবে ভ্রমণের অনুমতি থাকছে না। কেউ এমনটা করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে বাসায় ফেরত পাঠাবে এবং জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে। তবে নিজ এলাকায় হাঁটা, দৌড়ানো এবং সাইক্লিংয়ের অনুমতি থাকছে। প্রত্যেকেই নিজ শহরের লেক, সমুদ্র সৈকত ও পর্বতমালায় ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে অনেক লোকের একত্রিত হওয়ার অনুমতি থাকছে না।ধাজ্ঞা থাকছে না।

একে অপরের থেকে কমপক্ষে এক মিটার দূরত্বে অবস্থান করতে হবে। কনস্ট্রাকশন, ম্যানুফ্যাকচারিং, পাইকারি বিক্রেতা এবং রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কার্যক্রম চালু হবে। রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে তাদের সার্ভিস চালু করতে পারবে৷ তবে ক্রেতা সেখানে বসে খেতে পারবেন না, খাবার বাসায় নিয়ে যেতে হবে।

ইতালিতে ২০২১ সালের আগে পর্যটক প্রবেশ করতে পারবে না বলে যে খবর ছড়িয়েছে তা ভিত্তিহীন বলেও জানানো হয়েছে। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পর্যটক প্রবেশে বাঁধা থাকবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

ইতালির অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীরা আপাতত এই বছর পর্যটকদের জন্য সীমান্ত বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে সরকার এখনও টুরিস্টদের ওপর সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। ইতালির অনেক বিমানবন্দর এখনও খোলা। বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স তাদের যাত্রা স্থগিত রেখেছে। তবে ইতালির রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা আলইতালিয়া তাদের ইউরোপীয় ফ্লাইট চালু রেখেছে।

শর্তের মধ্যে আরও রয়েছে, বিদেশ থেকে আগতদের বাধ্যতামূলক দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের জানাতে হবে, কী কারণে ইতালিতে ভ্রমণ করছেন তারা, ইতালিতে কোথায় সেলফ আইসোলশনে থাকবেন, সেখানে কিভাবে যাবেন- এসব ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার এয়ারলাইন্স বা ট্রাভেল কোম্পানিকে দিতে হবে।

জ্বর-কাশি বা কোভিড-১৯ এর কোনো লক্ষণ থাকলে সেটা অবশ্যই ইতালির স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে তিন হাজার ইউরো জরিমানায় পড়তে হবে। অন্য দেশ থেকে আগত যাত্রীরা পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করতে পারবেন না। পরিচিত কারো ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করতে হবে তাদের কিংবা ট্যাক্সি ও রেন্ট-এ কার ব্যবহার করতে হবে। যাত্রীদের নিজেদের ব্যবস্থা না থাকলে ‘সিভিল প্রটেকশন ডিপার্টমেন্ট’ তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। সেক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয় ওই যাত্রীকে বহন করতে হবে।

ইতালিতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১১ মার্চ রাতে গোটোদেশ লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া হচ্ছে দেশটির সব ধরনের প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠার চলতি মাসে, বার ও রেস্টুরেন্ট ১ জুন থেকে এবং সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

May 2020
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24