বিশ্ব কাঁপছে করোনা আতঙ্কে। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু মহামারি আকার ধারণ করা সেই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তবে যুক্তরাজ্যের প্রয়াত এক বিজ্ঞানীর পরিবারের দাবি, ওই বিজ্ঞানী মৃত্যুর আগে এমন একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে গেছেন যেটি করোনার বিরুদ্ধে হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র।
ইতোমধ্যে বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন দেড় লাখ মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। ঠিক এমন সময় ওই বিজ্ঞানীর পরিবারের কথায় নতুন করে আশার প্রদীপ জ্বলতে শুরু করেছে।
২০১৪ সালে ৮৪ বছর মারা যান বিজ্ঞানী এরিক ওয়ার্লো। কিন্তু তার আগেই তিনি মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই ভ্যাকসিনটি আবিষ্কার করে গেছেন বলে দাবি বিজ্ঞানীর মেয়ে জেনের (৬৫)। জেন জানিয়েছেন, তার বাবা বিজ্ঞানী এরিক এইচ-৫এন ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক হিসেবে বেসরকারি বিনিয়োগে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করেছিলেন। যা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ভ্যাকসিনটি মানুষের ক্ষেত্রে উপযুক্ত টিকা হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ভ্যাকসিন বিজ্ঞানী হিসেবে অবসরে যাওয়া এরিক মৃত্যুর আগে তার গবেষণা ও ফলাফল নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখে যান। এটি পিয়ার-রিঝিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল। ইতোমধ্যে তার পরিবার সেই গবেষণাপত্রটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এই গবেষণাপত্রটিতে উল্লেখ করা পদ্ধতি অনুযায়ী ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে মহামারি করোনা ভাইরাস নির্মূলে সহায়ক হবে।
বিজ্ঞানী এরিকের কন্যা জেন বলেন, ‘আমরা বিজ্ঞানী নই বা আমরা কোনও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা ফার্মাসিউটিক্যালস সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত নই। বিশ্বজুড়ে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির নানা পদ্ধতি ও পরীক্ষায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে। বৈশ্বিক এই জরুরি পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি, করোনার ভ্যাসকিন তৈরিতে এই গবেষণাপত্রটিতে নজর দেয়া উচিত। এটাই হতে পারে সমস্যার দ্রুত, সহজ ও দরকারি সমাধান।’
জেন জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটির অন্যতম সুবিধা হলো- এটি নাকে ড্রপের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। যা নাক ও ফুসফুস রক্ষায় প্রথম সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির সময় সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। ভ্যাকসিনটি উৎপাদন করা সহজ। এর আগেও ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলও খুব ভালো ছিল।
পাশাপাশি আরেকটি অপ্রত্যাশিত ও অনন্য প্রভাব হচ্ছে- ইতোমধ্যে সংক্রমণ উপসর্গ দেখানো পাখিগুলোর মধ্যে এ রোগের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছিল ভ্যাকসিনটি।
বিজ্ঞানী এরিক মৃত্যুর কিছুদিন আগে ভ্যাকসিনটি পরিচালক পদ্ধতি নিয়ে আরেকটি উপায় সম্পর্কে লিখেছিলেন। সেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, কীভাবে ভ্যাকসিনটি ‘অভূতপূর্ব নিরাময়’ প্রভাব ফেলেছিল।
জেন বলেন, ‘আমার বাবা মৃত্যুর আগেই ধারণা করেছিলেন, করোনা ভাইরাসের মতো এমন কোনও মহামারি শিগগিরই ঘটতে যাচ্ছে পৃথিবীতে। কিন্তু তিনিও হতাশও হয়েছিলেন। কারণ ভ্যাকসিনটি নিয়ে তিনি তখন কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি। মৃত্যুর ঠিক আগে আমাদের বাবা ভ্যাকসিনটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও ব্যবহারের চূড়ান্ত উপায় তার সন্তানদের জন্য রেখে যান।’
জীবদ্দশায় বিজ্ঞানী এরিক ইউএন ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন ও ইউকে ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ভ্যাকসিন টেকনোলজিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘ ৫০ বছর।
Leave a Reply