বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস অবশেষে আঘাত হেনেছে বাংলাদেশেও। গতকাল রবিবার (৮ মার্চ) সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তিনজনের শরীরে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ৩ জনের মধ্যে ২ জন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে। আক্রান্তদের দুজন ইতালি থেকে আসা প্রবাসী বাংলাদেশি। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০৭টি দেশের মানুষের শরীরে শনাক্ত হয়েছে। এই মারণ ভাইরাসে নিহত হয়েছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ১১৯ জন। চীনের বাইরে নিহত হয়েছে ৭০৯ জন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। করোনা ভাইরাস খালি চোখে দেখা যায় না। এটি দেখা যায় ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) জানিয়েছে, ভাইরাসটি শক্তিশালী হলেও এটিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে ও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ৮টি পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ।
১. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করতে পারে- বাজারে এমন মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। যতটা সম্ভব এসব মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
২. করোনা ভাইরাস সাধারণত মাটিতে অবস্থান করে। এটি বাতাসে ছড়ায় না। তাই ঘর-গৃহস্থালি নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৩. কোনও ধাতব পাত্রে বা বস্তুতে করোনা ভাইরাস পড়লে প্রায় ১২ ঘণ্টা জীবিত থাকতে পারে। তাই সব সময় সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৪. সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পরতে হবে। কারণ করোনা ভাইরাস কাপড়ে ৯ ঘণ্টা জীবিত থাকতে পারে। ধোয়া কাপড় রোদে দুই ঘণ্টা শুকিয়ে নিতে পারলে ভাইরাসটি মারা যাবে।
৫. হাত বা ত্বকে এ ভাইরাসটি ১০ মিনিটের মতো জীবিত থাকতে পারে। তাই অ্যালকোহল মিশ্রিত জীবাণুনাশক হাতে মেখে নিলে ভাইরাসটির মৃত্যু হবে।
৬. গরম আবহাওয়ায় করোনা ভাইরাস টিকতে পারে না। করোনা ভাইরাসটির মৃত্যুর জন্য ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাই যথেষ্ট। তাই খাবার পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। সবসময় কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। আইসক্রিম খাওয়া যাবে না। ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
৭. লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে প্রতিদিন গারগল করতে হবে। তাতে গলা পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি টনসিলের জীবাণুসহ করোনা ভাইরাসও দূরে থাকবে এবং ভাইরাসটি ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারবে না।
৮. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বারবার নামে, মুখে আঙুল বা হাত দেয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ নাক, মুখ আর চোখ দিয়েই মানুষের শরীরে বেশিরভাগ জীবাণু প্রবেশ করে।
Leave a Reply