রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
ভোটারশূন্য-দখল-হামলা-বাধায় ভোটগ্রহণ শেষ, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফল

ভোটারশূন্য-দখল-হামলা-বাধায় ভোটগ্রহণ শেষ, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফল

ভোটকেন্দ্র দখল করে নৌকার ব্যাচধারীদের উপস্থিতি, পোলিং এজেন্ট ঢুকতে না দেয়া, মারধর করে এজেন্টদের বের করে দেয়া, ভোটারদের ভোট দিতে বাধা, সংঘর্ষ, ইভিএম হ্যাংসহ নানা অভিযোগে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফল ঘোষণা করা হবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে এই ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সম্পূর্ণ ভোটগ্রহণ করা হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে।

ভোটাশূন্য কেন্দ্র
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আলোচিত এই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র গুলো ছিল একেবারেই ফাঁকা। অলস সময় পার করেছেন ভোটগ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। তবে কিছু কেন্দ্র ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এই সংখ্যা খুব সামান্য। ভোটার না থাকায় বারান্দায় রোদ পোহাতে দেখা যায় পোলিং কর্মকর্তাদের।

বিকেল ৩টা পর্যন্ত  রাজধানীর উত্তরা, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোটার উপস্থিতি খুব কম। হাতেগোনা দুয়েকটি কেন্দ্র ছাড়া কোথাও ভোটারদের লাইন ছিল না। দুয়েকজন ভোটার এসে ভোট দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন।

নৌকার ব্যাচধারীদের উপস্থিতি:
ভোটকেন্দ্রের বাহিরে ক্ষমতাসীনদের একক আধিপত্য দেখা গেছে। বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোটকেন্দ্রের বাহিরে বিপুল লোকসমাগম। তাদের প্রায় সবাই গালায় ঝুলছে নৌকাসহ বিভিন্ন কাউন্সিল প্রার্থীদের ব্যাচ।

বেলা ১১টার দিকে হাবিবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজের সামনে গিয়ে দেখে যায়, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে। এখানে ধানের শীষ বা অন্যান্য প্রার্থীদের লোকজনকে পাওয়া যায়নি।  সিদ্বেশ্বরী বালিকা ও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে নৌকার ব্যাচধারীদের ব্যাপক উপস্থিতি। এখানে নেই ধানের শীষের লোকজন। তবে এখানে দুই-একজন পাওয়া গেছে হাতপাখার লোকজন। তবে ভেতরে চিত্র ঠিক উল্টো।

বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ
অধিকাংশ কেন্দ্রগুলোতে বিএনপির প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করেছেন দলের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল।

এছাড়াও দক্ষিণে সকাল থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার কিছু কেন্দ্রে এজেন্ট প্রবেশ করলেও পরবর্তীতে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারও এসব অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।

গোপন বুথে উপস্থিতি
অধিকাংশ কেন্দ্রে ভেতরে নৌকার লোকজন ও ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের লোকজনকে বুথের ভেতরে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তারা দেখেছেন ভোটার কোন প্রতীকে ভোট দিচ্ছেন। তাদের অনেকে নৌকা ও পছন্দের কাউন্সিলর প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করেছেন।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এক ভোটার অভিযোগ করেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে আঙুলের ছাপ দেয়ার পর তার ভোট নিয়ে নেয়া হয়। ভোট দেওয়ার বাটনে চাপ দিতে পারেননি, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি বাটন চাপ দিয়ে তার ভোট দিয়ে দিয়েছেন। এমন কাজে হতবাক তিনি, বের হয়ে এসে অভিযোগ করতে থাকেন।

সংসদ ভবনের উল্টো দিকে রাজধানী স্কুলে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে জানান দুজন ভোটার। তাদের অভিযোগ সব প্রক্রিয়া মেষ করার পর বাটন চাপার সময় অন্য ব্যক্তি এসে ভোটারদের একটি প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করেন। ওই দুজন ভোটার জানান, এটা দেখে তারা ভোট না দিয়েই চলে এসেছেন।

উত্তরা গার্লস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে খুর্শিদা জাহান নামের এক ভোটার অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর এক কর্মী বুথের পর্দা ঘেরা ভোট দেয়ার স্থান পর্যন্ত নিয়ে যান। এই কর্মী ভোটার ভোট দেয়ার সময়ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাকে বারবার বলছিলেন ‘নৌকায় ভোট দেবেন’।

রক্তাক্ত সাংবাদিক
ভোটের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন অন্তত ৬ জন সাংবাদিক। অনিয়মের নানা চিত্র ধারণের সময় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের হামলায় আহত হয়েছেন বলে তারা অভিযোগ করেন। এছাড়া বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নাজেহাল ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। অনেক গণমাধ্যম কর্মীর মুঠোফোন ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। রাজধানীর পৃথক ভোটকেন্দ্রে এসব হামলার ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- অনলাইন নিউজ পোর্টাল আগামিনিউজের রিপোর্টার মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, ফটোএজেন্সি প্রেস বাংলা এজেন্সি (পিবিএ)-এর বিশেষ প্রতিনিধি জিসাদ ইকবাল, জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান আলোকচিত্রী শেখ হাসান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদক মাহবুব মমতাজি, ডেইলি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদক নূরুল আমিন এবং পরিবর্তন ডটকমের ফটো সাংবাদিক ওসমান গনি।

হামলা
ঢাকা উত্তর সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের গাড়িতে ৫টি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।

দক্ষিণের বকশীবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিএনপির প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৮টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। প্রায় ২০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

February 2020
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24