উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোয় শক্তিশালী মাদক চক্রের সঙ্গে সরকারের ‘মাদকবিরোধী যুদ্ধে’ এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
সোমাবার (৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির সরকার জনিয়েছে, নিখোঁজের মধ্যে এক চতুর্থাংশই নারী। বিশ্বের চতুর্দশ বৃহত্তম স্বাধীন এ রাষ্ট্রে নতুন রিপোর্ট অনুযাই নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা পূর্বের ধারণার চেয়ে ৫০ শতাংশেরও বেশি।
২০০৬ সালে মেক্সিকোতে মাদকবিরোধী যুদ্ধে নামানো হয় সেনাবাহিনীকে। সে সময়কার প্রেসিডেন্ট ফেলিপ চালডেরন সে বছর প্রায় সাড়ে ছয় হাজার সেনা সদস্যকে মিচোয়াচান রাজ্যে মোতায়েন করেন। সরকারি তথ্য অনুসারে, ওই বছর ১১ হাজার ৮০৬ টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০১৬ সালে গুমের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৩৪০টি। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালে গুমের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার। মেক্সিকোর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতে, গুম হওয়া মানুষের মধ্যে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল ২৫ শতাংশ।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি অব মিসিং এর প্রধান কারলা কুইনতানা বলেন, সরকারি হিসেবে নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা ৬১ হাজার ৬৩৭ জন। নিখোঁজদের ৯৭ দশমিক ৪ শতাংশেরও বিশি ২০০৬ সালে মাদকবিরোধী যুদ্ধ শুরুর পর নিখোঁজ হয়েছে।
২০১৮ সালে মেক্সিকোর বর্তমান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোর দায়িত্ব নেয়ার পর মাদক নিয়ন্ত্রণের নতুন কৌশল নেন। তার প্রশাসন মাদকচক্রের সঙ্গে ‘গুলি নয়, আলিঙ্গন’ নীতি গ্রহণ করে বৈষম্য ও দুর্নীতি মোকাবিলায় মনোনিবেশ করেন। তবে তার পরেও থামেনি মৃত্যুর মিছিল। গত বছরও দেশটিতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ হত্যাকাণ্ড শিকার হয়।
মেক্সিকোর কর্মকর্তার বলেছেন, নিখোঁজদের উদ্ধার তৎপরতায় এখন পর্যন্ত ৮৭৩ টি গোপন গণকবরে ১ হাজার ১১৪ টি মরদেহ পাওয়া গেছে। দেশটির জাতীয় তল্লশি কমিশন বলেছে, কাজ শুরুর প্রথম ১৩ মাসে উদ্ধার হওয়া মরদেহের মাত্র এক তৃতীয়াংশ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে আর এক চতুর্থাংশেরও কম সংখ্যকের মরদেহ স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া গেছে। সরকার ডিএনএ ডাটাবেশ স্থাপন করে মরদেহ শনাক্তের চেষ্টা চলাচ্ছে। তবে বেশিরভাগই চিহ্নিত করা যায়নি।
Leave a Reply