ব্যাপক সমালোচনা ও বিক্ষোভের মুখেও ‘মুসলিমবিরোধী’ নাগরিকত্ব সংশোধন বিল (ক্যাব) পাস হওয়ার প্রতিবাদে আসামসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার লোকসভায় বিল পাসের একদিন পরই মঙ্গলবার সকাল থেকে ভারতের মুসলিম জনতা ও বিল বিরোধী সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে এসেছে। আসামে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে আসামের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় বিক্ষোভ। রাস্তায় রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। আসামে লাগাতার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে উত্তর-পূর্ব ছাত্র সংস্থা (নেসো)। পাস হওয়া বিলের বিরোধিতা করে নেসোর পক্ষ থেকে ১১ ঘণ্টার হরতাল ডাকা হয়েছে।

এদিকে বিল পাস হওয়ার আগেই গতকাল সোমবার আসামসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিল বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। নেসো ছাড়াও সর্ব কোচ রাজবংশী ছাত্র সংসদ (একেআরএসইউ), সর্ব আসাম ছুটিয়া ছাত্র ইউনিয়ন ও সর্ব মোরান ছাত্র ইউনিয়নও হরতালের ডাক দিয়েছে।

গতকাল খড়গপুরে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পর রাবণপোড়া ময়দানে সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এনআরসি’র বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আসুন জোট বাঁধি। একজনকে দেশ থেকে তাড়ানো চলবে না। নো এনআরসি, নো ডিভাইড অ্যান্ড রুল। দেশের থেকে বড় কিছু নেই, ভয় পাবেন না। ফেট্টি পরে যারা এসে দেশ ভাগ করতে বলবে, তাদের বলে দিতে হবে- ‘বাংলার সংস্কৃতি ফেট্টিবাজদের জায়গা নয়’। আমাদের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয়ার ক্ষমতা কারও নেই।’

নাগরিক সংশোধনী বিলটি চূড়ান্ত রূপ নেয়ার আগে রাজ্যসভায় পাস হতে হবে। নতুন এ বিল চূড়ান্তভাবে পাস হলে ভারতে অবস্থানকারী বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী সকল অভিবাসীরা ভারতের স্থায়ী নাগরিক হওয়ার অনুমোদন পাবে বিলটি। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র মুসলিমরা নাগরিক হওয়ার আবেদন করতে পারবে না।

ধারণা করা হচ্ছে, লোকসভায় যেহেতেু বিজেপির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, ফলে এই লোকসভায় (নিম্নকক্ষ) অনায়াসেই পাস হয়ে গেল। তবে রাজ্যসভায় (উচ্চকক্ষ) কিছুটা বাধার সম্মুখীন হতে পারে বিজেপি। কেননা, রাজ্যসভায় দলটির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তবে সেখানেও বিরোধী কতিপয় দল বিলের বিরুদ্ধে ওয়াকআউট করে কার্যত বিলটি পাসে বিজেপিকে পরোক্ষভাবে সাহায্য করতে পারে।