রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান দেখতে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নাইমুল আবরার (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির (দিবা শাখা, রোল নং ৮৭১২) ছাত্র ছিল।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে, বিষয়টি আয়োজক কর্তৃপক্ষ গোপন রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে নাইমুল আবরার নিহতের ঘটনায় আজ শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো’র অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছেন রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পরও বিষয়টি আয়োজক কর্তৃপক্ষ গোপন রাখায় এবং ঘটনার পর তাকে পাশের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীতে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেস রেসিডেনসিয়ালের শিক্ষার্থীরা। তবে নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় পুলিশ আবরারের লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে মঞ্চে গান চলছিল। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে ছড়িয়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় আবরার। পরে তাকে সেখান থেকে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাইমুল আবরারের মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে পরিবার ও সহপাঠীদের মাঝে। মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
আবরারের সহপাঠীদের একজন জানান, তাকে যখন অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয় তখনও তার প্রাণ ছিল। তার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার বিষয়টি কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তার বাবা-মা ও কলেজ কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়নি। রাতের মাঝেই কলেজ ক্যাম্পাসে জানাজা পড়িয়ে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে আবরারের গ্রামের বাড়িতে।
মোহাম্মদপুর থানার এসআই মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, কিশোর আলোর প্রোগ্রামে বিকাল সাড়ে ৩টায় আবরার বিদ্যুতায়িত হয়। এরপর তাকে মহাখালী আয়েশা মেমোরিয়ালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে আমাদের পুলিশ, স্কুল কর্তৃপক্ষে এবং অনুষ্ঠান আয়োজকের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশ নিয়ে আসে। নিহত ছেলেটির পরিবারের কোনও অভিযোগ নেই। আমরা তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছি।
এদিকে এই ঘটনার পর কিশোর আলোর পক্ষ থেকে লেখক আনিসুল হক একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বিবৃতিতে বলেন, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, কিশোর আলোর অনুষ্ঠান দেখতে এসে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাঈমুল আবরার বিদ্যুতায়িত হয়। পরে ওখানেই জরুরি মেডিক্যাল ক্যাম্পে তাকে নেওয়া হয়। দুজন এফসিপিএস ডাক্তার তাকে দেখেন। তারা জরুরি ভিত্তিতে আবরারকে হাসপাতালে নিতে বলেন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমার জীবনে এর চেয়ে মর্মান্তিক খবর আর পাইনি। আমি ও কিশোর আলো আজীবন আবরারের পরিবারের সঙ্গে থাকবো। যদিও এই অপূরণীয় ক্ষতি কিছুতেই পূরণ হবে না। আমি কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায় আছি। আবরারের জন্য দোয়া করছি।’
Leave a Reply