গুরুত্বপূর্ণ যে প্রকল্প নিয়ে বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষায় সিলেটের মানুষ, সেই প্রকল্পে অবশেষে সুখবর এসেছে। এই সুখবর দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ড. মোমেন জানিয়েছেন, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয়লেনে উন্নীত করার যে প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা ছিল, তা কেটে গেছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশে সরকারের এই অগ্রাধিকার প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সম্মতি দিয়েছে।
মন্ত্রী জানান, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক সার্ভিস লেনসহ ছয়লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে অর্থ ছাড়েরর বিষয়টি অনুমোদন করেছে এডিবি। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রæত এই প্রকল্পের কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট। সার্ভিস লেনসহ এই মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা নিয়ে সেই ২০১৬ সাল থেকে তোড়জোড় চলছে। তবে অর্থায়ন জটিলতায় আটকে ছিল প্রকল্প শুরুর কাজ।
জানা গেছে, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয়লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে শুরুতে চীনা অর্থায়নের কথা ছিল। এ প্রকল্পটি ২০১৬ সালে ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘স্ট্রেনদেনিং ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রডাকশন ক্যাপাসিটি কো-অপারেশন’ নামক সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) অন্তর্ভুক্ত হয়। চীন সরকার চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে এ প্রকল্পের দায়িত্ব দেয়। তবে তারা সময়মতো কাজ শুরু করতে পারেনি।
পরে ২০১৮ সালের ২৯ মে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ চিঠি দিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) জানায়, প্রকল্পটি চীনা অর্থায়নের পরিবর্তে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। ওই বছরের ২৯ জুলাই চীনা দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়ে অর্থায়ন প্রক্রিয়া বাতিল করতে অনুরোধ জানায় ইআরডি।
তবে এরপরও পরিকল্পনা কমিশন এবং সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ প্রকল্পটির জন্য নতুন করে বৈদেশিক সহায়তা অনুসন্ধান করতে ইআরডিকে অনুরোধ জানায়। এর মধ্যে চীনের আরেকটি কোম্পানি অর্থায়নে আগ্রহ দেখালেও তা বেশি দূর আগায়নি। শেষপর্যন্ত এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
জানা গেছে, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয়লেনে উন্নীত করার বিষয়ে ভোটারদের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন। নির্বাচিত হয়ে প্রতিশ্রæতি রক্ষা করতে কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর প্রচেষ্টায় এই প্রকল্পটি গতি পায়।
জানা গেছে, ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব ঢাকা (কাচপুর)-সিলেট রোড টু ফোরলেন হাইওয়ে অ্যান্ড কন্সট্রাকশন অব সার্ভিস লেন অন বোথ সাইড’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হতে দেরি হওয়ায় প্রকল্প ব্যয়ও বাড়ছে। আগের ১২ হাজার ৬৮৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা থেকে ব্যয় বেড়ে ১৪ হাজার ১৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় দাঁড়াচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ছিল মেয়াদ। এখন ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে মেয়াদ। এ প্রকল্পে ২১৪ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার সড়কের কাজ হবে।
Leave a Reply