বুধবার, ১৬ Jul ২০২৫, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
আজকের সংবাদ শিরোনাম :
সিলেট-৬ আসনের বিএনপি নেতাকর্মীদের মিলনমেলা

সিলেট মহানগর যুবদল সহ সভাপতিদের অভিনন্দন

যুক্তরাজ্য যুবদলের সহ সভাপতি নির্বাচিত হলেন শামীম তালুকদার

১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আগামী বছরের ৩০ জুনের পর দায়িত্বে থাকবেন না ড. ইউনূস : প্রেস সচিব সরকার প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা ভারতের পুশইন উসকানি নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৩ জন খালাস

শুল্কমুক্ত হচ্ছে আরও ১০০ পণ্য

যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ

জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে কোনো গণহত্যা হয়নি: চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান
এখন কী হবে জমিরনের?

এখন কী হবে জমিরনের?

শনিবার দুপুরে যখন জানতে পারেন, চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা বা এনআরসিতে তার নাম নেই, আতঙ্কে আর অনিশ্চয়তায় মুষড়ে পড়েছেন গৌহাটির গৃহবধূ জমিরন পারভিন।

বিবিসি বাংলার অমিতাভ ভট্টশালী দুপুরের দিকে গৌহাটিতে তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান, কিছুক্ষণ পরপরই চোখ মুছছেন জমিরন পারভিন। স্বামী আজম আলী মৃধা এবং শ্বশুর বাড়ির অন্যান্যরা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। আট-নয় বছরের একমাত্র ছেলে বাচ্চাটি উদ্বিগ্ন হয়ে মাকে দেখছে।

স্বামী-সন্তান এবং শ্বশুর বাড়ির সবারই চূড়ান্ত তালিকায় নাম রয়েছে। বাবার পরিবারের সবাই তালিকায় রয়েছেন। বাদ পড়েছেন একমাত্র তিনি।

বিবিসিকে জমিরন বলেন, “খসড়া তালিকায় নাম না ওঠার পর সব সমস্ত কাগজ-পত্র দিয়ে আপিল করেছিলাম। কিন্তু তারপরও নাম নেই। জানিনা এখন আমার কি হবে।”

জমিরনের জন্ম আসামের বড়পেটায়। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রবেশপত্রে জমিরনের বাবার নামের বানান ভুল লেখা হয়েছিল বলেই এই পরিণতি। তার বাবার নাম আতব আলী, কিন্তু পরীক্ষার প্রবেশপত্রে নাম লেখা হয় আতাবর আলী। আর এই দুই অক্ষরের ভুলেই চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন এই নারীর।

জমিরনের স্বামী জানালেন, তারা ট্রাইব্যুনালের আপিল করবেন।

জমিরন পারভিন সহ আসামের ১৯ লাখেরও বেশি মানুষের নাম চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে। এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে এই ১৯ লাখ বাংলাভাষী মানুষের এখন কী হবে?

তারা কি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়লেন? এখনই সেটা তারা হচ্ছেন না। বাদ পড়া এই মানুষদের আপিলের জন্য ১২০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে তৈরি ট্রাইব্যুনাল ছাড়াও তারা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টেও আপিল করতে পারবেন। তবে ভারতের সমস্ত আদালতগুলো এমনিতেই সারা বছরই মামলার চাপে পর্যুদস্ত। ফলে আদালতে গিয়ে দীর্ঘ, জটিল এবং ব্যয়বহুল আপিল প্রক্রিয়ার সুবিধা কতজন নিতে পারবেন তা নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মধ্যে বিস্তার সন্দেহ রয়েছ।

বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র, অল্প শিক্ষিত বা নিরক্ষর মানুষগুলোর জন্য এই আপিল প্রক্রিয়ায় ঢোকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ফলে যারা আপিলে অসফল হবেন বা এই প্রক্রিয়াতে ঢুকবেনই না, তারা রাষ্ট্রবিহীন হয়ে পড়বেন – সে সম্ভাবনাই প্রবল।

আসামের লেখিকা সঙ্গিতা বড়ুয়া পিশারডি বিবিসিকে বলেন, “যাদের নাম চূড়ান্ত তালিকাতে নেই তারা অত্যন্ত শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যে তাদের এখন কী হবে। তার প্রধান কারণ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ভাবমূর্তি ভালো না, মানুষের আস্থা নেই।”

“ফলে সেখানে গিয়ে আদৌ কাজ হবে কিনা তা নিয়ে বহু মানুষ সন্দিহান।”

নাগরিকত্ব নির্ধারণে আসামে, এখন এ ধরনের ২০০টি বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল রয়েছে যেগুলোর অধিকাংশই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর। অক্টোবরের মধ্যে এ ধরণের ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০০০। এ সব আদালতের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের বিস্তর অভিযোগ রয়েছ। তাদের কাজের মধ্যে কোনও ধারাবাহিকতাও নেই।

সবচেয়ে বড় কথা প্রমাণের সমস্ত দায় বর্তায় বিদেশী হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তির ওপর। লাখ লাখ দরিদ্র, নিরক্ষর মানুষের কাছে সবকিছুর লিখিত রেকর্ডও নেই।

সাংবাদিক রোহিনী মোহন আসামের একটি জেলায় এসব ট্রাইব্যুনালের ৫০০টিরও বেশি রায় বিশ্লেষণ করে দেখতে পান ৮২ শতাংশ অভিযুক্তকেই বিদেশী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে । ৭৮ শতাংশ রায় হয়েছে অভিযুক্তের বক্তব্য না শুনেই।

এমনকি মোহাম্মদ সানাউল্লাহ নামে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক এক সদস্য, যিনি তার কাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলেন, তাকে পর্যন্ত বিদেশী হিসাবে চিহ্নিত করে ১১ দিন আটকে রাখা হয়েছিল।

এই ‘বিদেশী’দের পরিণতি কী হবে? তাদেরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা হতে পারে। যে হাজার খানেক মানুষকে আসামে ইতিমধ্যেই বিদেশী বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের বিভিন্ন কারাগারের ভেতর ছটি আটক কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকার এখন একটি আলাদা আটক কেন্দ্র তৈরি করছে যেখানে ৩০০০ লোককে রাখা যাবে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি বার বার জোর দিয়ে বলেছে অবৈধ মুসলিম অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। তবে প্রতিবেশী বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বলে দিয়েছে আসাম থেকে তারা একজনকেও গ্রহণ করবে না।

অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের মত ভারতের আসামে বিশাল সংখ্যক রাষ্ট্রহীন মানুষ তৈরি হতে চলেছে। তাদের জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে কিনা তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ইঙ্গিত নেই।

সরকারি শিক্ষা বা স্বাস্থ্য সেবা তারা পাবেনা কিনা তাও নিশ্চিত নয়। সবচেয়ে বড় কথা, জমিজমা রাখতে পারবেন কিনা সেটাও অস্পষ্ট। একটা ধারনা রয়েছে যে রাষ্ট্রবিহীন হয়ে পড়া মানুষগুলোকে হয়তো কাজ করার পারমিট দেওয়া হতে পারে এবং কিছু মৌলিক অধিকার দেওয়া হতে পারে। তবে ভোটের অধিকার থাকবে না – এটা নিশ্চিত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

September 2019
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24