নিউইয়র্ক : আগামী ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে ৩দিনব্যাপী উত্তর আমেরিকায় প্রবাসীদের মহামিলনমেলা হিসেবে পরিচিত ‘ফোবানা কনভেনশন’। ১৮ হাজারের অধিক আসনবিশিষ্ট লং আইল্যান্ডে নাসাউ কলসিয়ামে ফোবানা (ফেডারেশন অব বাংলাদেশী অর্গানাইজেশন্স ইন নর্থ আমেরিকা) কনভেনশনের হোস্ট কমিটির সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ২২ স্টেটের ৭৬ সংগঠনের প্রতিনিধিসহ ১০ হাজারের মত প্রবাসীর অংশগ্রহণে ৩দিনব্যাপী ৩৩তম ফোবানা সম্মেলনের সবধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। নিউইয়র্ক সিটির নিকটে লং আইল্যান্ডে বিশ্বখ্যাত নাসাউ কলসিয়ামের বিশাল অডিটরিয়ামে এ সম্মেলন শুরু হবে ৩০ আগস্ট শুক্রবার।
‘ আওয়ার চিল্ড্রেন-আওয়ার প্রাইড’ স্লোগানে উজ্জীবিত এই সম্মেলনে থাকবে নতুন প্রজন্মের ৪ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহণে ইয়ুথ ফোরাম। রয়েছে ‘মিস ফোবানা’ প্রতিযোগিতা। থাকবে মেধাবি ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে সনদ বিতরণের পর্ব। বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, দুবাই, কোরিয়া, আর্জেন্টিনা, কাতার, মালয়েশিয়া, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া এবং স্বাগতিক আমেরিকার বিজনেস-লিডারদের অংশগ্রহণে থাকবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশী পণ্যের আন্তর্জাতিকীকরণের সেমিনার। প্রবাসের চিকিৎসক এবং প্রকৌশলীগণের সমন্বয়েও অনুষ্ঠান হবে। থাকবে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এলামনাইদের পুনর্মিলনী। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারিদের নিয়েও থাকবে একটি পর্ব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে শুক্রবার সন্ধ্যা ৮টায়। ১৫০ জন শিল্পীর সমন্বয়ে এযাবতকালের সেরা একটি অনুষ্ঠান হবে সে সময়। থাকবে ফোবানার সকল অতিথি নিয়ে চমৎকার একটি ডিনার পার্টি।
২১ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যায় ফোবানার হোস্ট হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে আরো জানানো হয়, হোটেল ম্যারিয়টের ৪ শত কক্ষই রিজার্ভ হবার পর আশপাশের দুটি হোটেলে অতিথিরা সীট নিচ্ছেন। শনি ও রোববারের টিকিটের মূল্য মাথাপিছ ৩০ ডলার করে। সেখানে বাংলাদেশী পণ্যের ৬০টি স্টল ছাড়াও খাবারের জন্যে থাকবে আরো ৫টি স্টল। অর্থাৎ ফোবানায় আগতরা সবকিছু পাবেন সম্মেলন কেন্দ্রেই। হোস্ট কমিটির প্রেসিডেন্ট ড. দেলওয়ার হোসেন সকলকে স্বাগত জানিয়ে বিশাল এই কর্মযজ্ঞে গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তা চেয়েছেন। আহবায়ক নার্গিস আহমেদ জানান, শনি ও রোববার দুদিনের জন্যেই অডিটরিয়ামের ভাড়াসহ নানাভাবে লাগবে ৩ লাখ ডলার। এরবাইরে রয়েছে আরো অনেক খরচ। বাংলাদেশ, ভারত এবং আমেরিকা-কানাডার খ্যাতনামা শিল্পীরা থাকবেন বিভিন্ন পর্বে। তিনি বলেন, আমরা সমৃদ্ধির পথে ধাবমান বাংলাদেশকে উপস্থাপন করার পাশাপাশি হাজার বছরের ঐতিহ্যমন্ডিত বাঙালি সংস্কৃতির সাথেও প্রবাস প্রজন্মকে জড়িয়ে রাখতে অঙ্গিকারাবদ্ধ।
সদস্য-সচিব আবির আলমগীর সামগ্রিক প্রস্তুতি আলোকে জানান, ১৯৯৪ সাল থেকে নিউইয়র্কের সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে ড্রামা সার্কলের যে ঐতিহ্য রয়েছে, তা অটুট রাখতে এবার ফোবানার সবকিছু ঢেলে সাজানো হয়েছে। এজন্যে গঠিত বিভিন্ন সাব কমিটির শতশত সদস্য-কর্মকর্তা দিন-রাত কাজ করছেন। যার প্রকাশ ঘটবে সম্মেলনে। এজন্যে আমরা প্রবাসীদের সহায়তা চাচ্ছি।
ফোবানার নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মীর চৌধুরী সামগ্রিক প্রস্তুতির তথ্য জেনে অভিভ’ত হয়ে বলেন, ৩৩ বছরের ব্যবধানে ফোবানা কোন উচ্চতায় এসেছে এবার তারই প্রতিফলন ঘটবে ৩ দিনের অনুষ্ঠানমালায়। আমাদের এ সম্মেলনে নর্থ আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব ঘটবে। একইসময়ে ফোবানা নামে আরেকটি সম্মেলনের ঘোষণাকারিদের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে মীর চৌধুরী বলেন, আমাদের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। আসুন ভেদাভেদ ভুলে একসাথে বিশাল এই কর্মযজ্ঞে শরিক হই। তাহলেই ১৯৮৭ সালে যাত্রা করা এই সম্মেলনের ষোলকলা পূরণ হবে।
নির্বাহী সচিব জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘উত্তর আমেরিকায় বাঙালিদের বিশেষ একটি সুনাম রয়েছে। আমাদের সন্তানেরাও ভালো রেজাল্ট দিয়ে সুনাম কুড়াচ্ছে। এখন সময় হচ্ছে মার্কিন ধারায় নিজেদের অবস্থানকে জোরালোভাবে উপস্থাপনের। সে তাগিদেই সকলের প্রতি অনুরোধ, আসুন ফোবানা কনভেনশনে। দেখুন ফোবানার প্রকৃত রূপ। কীভাবে প্রতিনিধিত্বমূলক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে ফোবানা প্রবাসীদের এগিয়ে নিতে কাজ করছে। জাকারিয়া আরো উল্লেখ করেন, আগস্ট হচ্ছে শোকের মাস। এজন্যে আমরা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কোন মন্ত্রী অথবা হেভিওয়েট রাজনীতিককে পাইনি। এ প্রসঙ্গে কনভেনর নার্গিস আহমেদ জানান, স্বাগতিক নাসাউ কাউন্টির নির্বাহী কর্মকর্তা লরা কারেন সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সেমিনার-সিম্পোজিয়ামেও থাকবেন মূলধারার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
সদস্য-সচিব আবির আলমগীর এ সময় আরো জানান, সম্মেলনে কাব্য জলসা, কবি সমাবেশ থাকবে। রয়েছে মিউজিক আইডলদের দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনা। সবকিছু মিলিয়ে ৩৩ বছরের সেরা একটি সম্মেলন উপহার দেয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি এখন সম্পন্ন। সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো ছিলেন ফোবানা
Leave a Reply