শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:২২ অপরাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
আজকের সংবাদ শিরোনাম :
প্রবাস জীবন এবং বাংলা ভাষার জন্য আমাদের করণীয়

প্রবাস জীবন এবং বাংলা ভাষার জন্য আমাদের করণীয়

                                                                                                                                                                         

ঠিকানা

প্রবাস জীবন এবং বাংলা ভাষার জন্য আমাদের করণীয়

      যোবায়ের আহমদ ঃ

               বাস্তবতা মানুষের জীবনের খুব কঠিন এক ব্যাপার । শৈশব আর ছাত্র জীবনের সমাপ্তি ঘটার মুহুর্তেই তার যাত্রা শুরু। তবে মধ্যবিত্ত বা নিম্ন বিত্তদের কে জীবনের ক্রান্তিলগ্নে তার মাসুল হয়। জীবন জীবিকার যাঁতাকলে পড়ে কেউ হয়তো বিদেশে পারি জমান। কেউ আবার উচ্চবিলাসী জীবন যাপনের জন্য প্রবাসে পাড়ি জমায়। কোন কোন মাধ্যমকে অবলম্বন করে আজ আমাদের দেশের ছাত্র সমাজ থেকে শুরু করে,সকল মানুষের স্বপ্নের জায়গা হচ্ছে ইউরোপ এবং আমেরিকা। একটি প্রবাদ বাক্যের সাথে আমরা সবাই অনেক পরিচিত। “দিল্লির লাড্ডু খাইলে আফসোস করতে হয়,আবার না খাইলেও আফসোস করতে হয়”। আসলে প্রবাসে যারা অবস্থান করেন,তাদের জীবন-যাপনের গল্প আমাদের বাংলাদেশের মানুষের কাছে যদি কেউ উপস্থাপন করে, আমার মনে হয়না তারা সে কথা বিশ্বাস করবে। ওদের একটা ধারণা, প্রবাসে টাকা আর কাজের কোন অভাব নাই। আসলে আমার দেশের মানুষদের যদি আল্লাহ নিজে বোঝার ক্ষমতা না দেন, কোন মানুষের পক্ষে তাদের বোঝানো সম্ভব না।বাস্তব জীবনে যারা জীবিকা অর্জনের জন্য শারীরিক-মানসিক ভাবে পরিশ্রম করে টাকা উপার্জন করছে। সংসার খরচ আর ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দেয়ার পর যা থাকে তা থেকে নিজের মা বাবা অথবা আত্মীয়-স্বজনদের একটু সহযোগিতা করে। আর এই সহযোগিতার হাত তাদের কাছে অনেক স্বাভা‌বিক মনে হয়। কেউ কেউ আবার এটাকে তিরস্কার করে বলে,”ভিক্ষা দিচ্ছে আমাদের”। প্রবাসে না আসলে আমার মনে হয় জীবনের সাত কলাপূর্ণ হয় না। যখনই আপনি বিদেশের মাটি স্পর্শ করবেন, তখনই আপনার আসল জীবনের কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। তখনই মানুষ তার অতীতের অবহেলিত দিন আর মা বাবার অবাধ্যতার কথা উপলব্ধি করতে পারে। একজন কামাই করে,আর বাকি লোক বিলাসিতা করে দিন অতিবাহিত করে এটা অবশ্য সিলেট অঞ্চলে দেখা যেতো। সময়ের পরিবর্তনে যুগেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। প্রবাসে বাঙালী কমিউনিটি অনেক প্রসার লাভ করছে। যার ফলে শ্রতিতে , বিদেশের মাটিতে আমাদের শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে অনেক প্রভাব এবং সুনাম অর্জিত হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মকে বাঙালী শিক্ষা ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেয়া হয়না। সংস্কৃতি নামে গান বাজনা আর পিকনিকে নিয়ে গেলে পারিবারিকভাবে, নিত্যদিনের কথা তাদের সাথে বাংলায় কথা বলতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে তাদের ধারনা দিতে হবে। বাংলায় ভাষা যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা পেয়েছে, তা তাদেরকে বুঝাতে হবে। পারিবারিকভাবে আমরা আমাদের অবসান থেকে ভাষার জন্য কাজ করার মাধ্যমে দেশের মহত্ব স্পষ্টিত্ব করতে হবে আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে আর কোন লোক আসবে না। আমাদের নিজেদের অবস্থান থেকে, নিজের পরিবার হতে এই কাজ শুরু করতে হবে। যে যে দেশে আছে, তাকে সে দেশের ভাষা শিখানো লাগবে না। আর ইংরেজি ভাষায় কথা বলাটা এতো কঠিন না। অনেক বিদেশি আছে, যে বাংলায় কথা বলতে পারে। উৎসবে আপনার সন্তানদের নিয়ে যান, তাদেরকে বাংলা ভাষার গুরুত্ব উপলব্ধ‌ি করাবার চেস্টা করেন। আমার কাছে একটা জিনিস বড়ই আক্ষেপ লাগে। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা, নিজেদের এলাকাকে পৃথক করে বিভিন্ন সমিতি গঠন করে সমাজের জন্য কী রেখে যাচ্ছেন। বাৎসরিক পিকনিক, ইফতার মাহফিল,গান বাজনার মধ্যেই কি আপনার সীমাবদ্ধতা।সমিতি আর সংস্থা করে আঞ্চলিকতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে ভাগ করার অধিকার আপনাকে দেয়া হয় নাই।আমি আমার নিজের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশে ছাত্রদেরকে ইংরেজি ভাষা শিখার জন্য প্রত্যেক স্কুলে ফ্রি একটা প্রোগ্রাম চালু করেছি। যাতে করে আমার মতো প্রবাস জীবনে ইংরেজী ভাষা না জানার জন্য ঘাটে ঘাটে সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়। ছাত্ররা লেখাপড়া শেষ করার আগে যেন ঝরে না পড়ে তার জন্য আমরা দেশে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে নতুন প্রজন্মের জন্য “এডুকেশন গাইড অর্গেনাইজেশন” নাম দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। পারিবারিকভাবে মা-বাবা কে সন্তানদের সাথে বাংলায় কথা বলার জন্য আমার এই সংঠনের যাত্রা।আমি আপনাদেরকে শুধু এই জিনিসটা অনুরোধ করবো যে, হিংসা বিদ্ধেষ নয়, আন্তরিতার সহিত নিজের দেশটাকে ভালোবাসুন।যে যে আছেন, সেই অবস্থান থেকে উদ্যোগ নেন আমরা আমাদের দেশকে কিছু একটা দেয়ার চেষ্টা করে দেখি। ## লেখক: যোবায়ের আহমদ, চেয়ারম্যান, এডুকেশন গাইড অর্গানাইজেশন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24