বাংলাদেশ ::দেশজুড়ে গুজবের মাধ্যমে উদ্ভট রকমের অরাজকতা দেখা দিয়েছে। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে সারা দেশে গত ৪৮ ঘণ্টায় পিটিয়ে মারা হয়েছে ৮ জনকে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে- এমন গুজব ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ায় ভয়াবহ এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে চারপাশে। আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ কোনো যৌক্তিকতা ধার না ধরে সন্দেহের বশে ঘটিয়ে ফেলছে গণপিটুনির ঘটনা। গুজবের ওপর ভর করে গণপিটুনিতে কয়েকজন নিহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণকে সতর্ক করেছে সরকার। কোথাও কারও ব্যাপারে সন্দেহে হলে গণপিটুনি না দিয়ে এ ব্যাপারে দেশের জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ নম্বরে জানাতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২২ জুলাই) সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়- একটি স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক গুজব ছড়িয়ে ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে হতাহত করা সংক্রান্ত খবরের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যেকোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থি ও গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ।
কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৯৯৯-এ কল করে দ্রুত পুলিশের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
এর আগে এ ধরনের হত্যা বন্ধে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। ইতিমধ্যে পুলিশের সব ইউনিটকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক টহল, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো, জনসচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং ও মিডিয়ায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশের বার্তায়।
সম্প্রতি পদ্মা সেতু নির্মাণে এক লাখ মানুষের মাথা প্রয়োজন বলে উদ্ভট গুজব ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার নেত্রকোনায় শিশুর কাটা মাথা পাওয়া যায় এক যুবকের কাছে। তাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। যদিও পরে পুলিশ জানায় এই ঘটনার সঙ্গে পদ্মা সেতুর গুজবের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া শনি ও রবিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপিটুনিতে কয়েকজন মারা গেছেন। বিশেষ করে ঢাকার বাড্ডায় গণপিটুনিতে এক নারী নিহত হওয়ার পর বিষয়টি সব মহলকে ছুঁয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে গুজব ও গণপিটুনির বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হতে থাকে।
Leave a Reply