নিউইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের ‘আব্রেলা সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ঘিরে দায়েরকৃত মামলা খারিজ হয়ে গেছে। ফলে সোসাইটির নির্বাচন আয়োজনে আরো কোন বাধা নেই বলে সোসাইটি সূত্রে জানা গেছে। এদিকে মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) অচিরেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সোসাইটি নিউইয়র্ক-এর কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিলো। নির্বাচনে ‘রব-রুহুল’ ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল ছাড়াও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আরো দু’জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচন ঘিরে সোসাইটির তিন সদস্য যথাক্রমে আলী আকবর, জিআর চৌধুরী ও শফিকুল ইসলাম গত বছরের ১৮ অক্টোবর কুইন্স সুপ্রীম কোর্টে মামলা (ইনডেক্স নং ৭৮০৭/২০১৮) করেন। এদের মধ্যে দুজন ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সদস্য প্রার্থী ছিলেন, ত্রুটির কারণে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিলো। মামলার বিবাদী ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান এস এম জামাল ইউ আহমেদ এবং সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ। খবর ইউএনএ’র।
সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি বলেন, আদলত কর্তৃক সোসাইটির নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ায় এই স্থগিত হওয়া নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর কোন বাধা রইলো না। আমরা নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে সভায় বসে নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবো। এজন্য সর্বাগ্রে ভোট কেন্দ্র (স্কুল/মিলনায়তন) পাওয়ার পর ভোট গ্রহণের দিন তারিখ নির্ধারণ করা হবে। ইতিপূর্বে নির্ধারিত ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই ভোট গ্রহণ হবে। গত মঙ্গলবার (১৬ জুন) ইসি’র বৈঠকে নির্বাচন বিষয়ে পর্যালোচনা হয়েছে যে কবে, কিভাবে ভোট গ্রহণ করা যায়। তবে সবার আগে ভোট কেন্দ্র পওয়া সাপেক্ষে নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভোট কেন্দ্র চুড়ান্ত করার উদ্যোগ নেয়া হবে এবং পরবর্তীতে ভোটের দিন-তারিখ নির্ধারণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইসি’র পরবর্তী সভা আগামী ২৪ জুলাই বুধবার অনুষ্ঠানে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
দীর্ঘ দিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোসাইটি অফিসে ইসি’র সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি। সভায় নির্বাচন কমিশনার অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম মিয়া, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, কাউছারুজ্জামান কয়েছ ও মোহাম্মদ রুহুল সরকার উপস্থিত ছিলেন। অনুস্থতার কারণে অপর সদস্য খোকন মোশারফ ষঅয় যোগ দিতে পরেননি।
আরো উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র চলতি নির্বাচন ঘিরে সদস্য/ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন ২৭,৫১৩। যা রেকর্ড ভোটার। এরমধ্যে ৪৮৮ জন আজীবন সদস্য/ভোটার রয়েছেন। সাধারণ ভোটার হচ্ছে ২৭,০২৫ জন। সোসাইটির ইতিহাসে এতো সংখ্যক সদস্য/ভোটার হওয়ার নজির নেই। এতো ব্যাপক ভোটার নিয়ে সোসাইটির নির্বাচন জমে উঠবে বলে সংশ্লিরা আশা প্রকাশ করছেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের অনুষ্ঠিত সোসাইটির নির্বাচনে ভোটার ছিলো ১৮ হাজার ৫৫১ জন। এরমধ্যে ১১ হাজার ১৫৭ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। সোসাইটর সদস্য পদের ফি এক বছরের জনপ্রতি ২০ ডলার। এবং আজীবন সদস্য পদের ফি ৫০০ ডলার।
এদিকে নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা খারিজ হওয়ার পর সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিকারী প্রার্থীরা দীর্ঘ নিরবতার পর আবার জেগে উঠতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নতুন করে প্রচার-প্রচারণা। এব্যাপারে ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী বলেন, আল্লাহর রহমতে মামলা খারিজ হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনে কোন বাধা নেই। আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি সবার সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন বলেন, আমরা নির্বাচনের ব্যাপারে সবসময় প্রস্তুত ছিলা, এখনো আছি। মামলা খারিজ হওয়ার পর আমরা নতুন করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের চুড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- আব্দুর রব মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দীন দেওয়ান, সহ সভাপতি- আব্দুল খালেক খায়ের, সাধারণ সম্পাদক- রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সহ সাধারণ সম্পাদক- মো. আজাদ (বাকির), কোষাধ্যক্ষ- নওশেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক- আবুল কালাম ভুঁইয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- ডা. শাহনাজ লিপি, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক- রিজু মোহাম্মদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- মোহাম্মদ টিপু খান, সাহিত্য সম্পাদক- ফয়সল আহমদ, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক- মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক- প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরী সদস্য- মোঃ সাদী মিন্টু, ফারহানা চৌধুরী, শাহ মিজান, আবুল বাশার, আক্তার হোসেন বাবুল ও সুশান্ত
Leave a Reply