আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ঐক্য ছেড়ে একা হওয়ার পেছনে সাংগঠনিক নিস্ক্রিয়তার অভিযোগসহ বেশ কয়েকটি বড় কারণ উল্লেখ করেছে দলটি।
তবে বিএনপি নেতারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও, ঐক্যফ্রন্টের কেউ কেউ নিস্ক্রিয়তা কাটিয়ে ওঠার তাগিদ দিয়েছেন।
বিএনপি নেতারা বলছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। নির্বাচনে যে কজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারাও পরে দলীয় সিদ্ধান্তকে না মেনে জাতীয় সংসদে যোগ দিয়েছেন। যা শুধু তাদের রাজনীতিতেই প্রভাব পড়েনি, পুরো জোটের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের পথ খুঁজছে বিএনপি। তারা ভাবছেন সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করার কথা। এ লক্ষ্যেই এগোচ্ছে তারা। জোটের অন্যদেরও একই পরামর্শ দিচ্ছে।
তবে জোটের অন্য নেতারা বলছেন, বাইরে প্রকাশ না করলেও দৃশ্যমান কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকায় ২০ দল নিস্ত্রিয় হয়ে পড়েছে।
এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের দিকে তাকানোর সময় বিএনপির নেই। তাদের কারণেই রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু কোনো সংকট নিরসনে তাদের আন্তরিকতা নেই।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে। এখন রাজনৈতিক শুন্যতা বিরাজ করছে। তাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাগারে, মামলা-হামলায় নিজেদের সাংগঠনিক অবস্থাও খারাপ।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট তারা গড়েছিলেন, নির্বাচনের পর গত সাত মাসে তার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দলের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, জনগণের সমস্যায় তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নতুন উদ্যমে পথ চলা শুরু করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া, জামায়াতকে মনোনয়ন, জাতীয় সংসদে যোগদান, বিএনপি মহাসচিবের সংসদে যোগ না দেওয়া, অন্যদের সংসদে যোগদান, নির্বাচনের পর ফ্রন্টের পক্ষ থেকে সোনাগাজীর নুসরাত জাহান হত্যাকাণ্ড, বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, বাজেটের মধ্য দিয়ে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর করারোপসহ জাতীয় সমস্যার বিষয়ে ফ্রন্টের ‘নিশ্চুপ’ ভূমিকাকে ফ্রন্ট ছাড়ার কারণ হিসেবে সামনে আনা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবীদ। তিনি তার দল থেকে, তার রাজনৈতিক দিক থেকে অভিযোগ করতেই পারেন।
কাদের সিদ্দিকীর চলে যাওয়ায় ঐক্যফ্রন্ট ভেঙে গেছে এমনটা মনে করছেন না নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, তবে এটাকে সক্রিয় করে তুলতে হবে। কাদের সিদ্দিকী যেসব ইস্যুকে সামনে এনেছেন, সেগুলোকে নিষ্পত্তি করতে হবে।
Leave a Reply