বাংলাদেশ ::বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকাকালে ১৯৯৪ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলার অভিযোগের মামলায় বিএনপির ২৮ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে পাবনার অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক রুস্তম আলী এ আদেশ দেন।
একই সাথে চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, অন্যতম আসামি পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আক্তারুজ্জামান মুক্তা জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ (রবিবার) সাফাই সাক্ষ্য হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষ কোনও সাফাই স্বাক্ষী হাজির না করে সময় প্রার্থনা করে আবেদন জানান। আদালত সময়ের আবেদন বাতিল করে আগামীকাল সোমবার যুক্তিতর্ক শুরুর দিন ধার্য এবং হাজির হওয়া ২৮ আসামির জামিন বাতিল করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। যুক্তিতর্ক শেষ হলে রায় ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কারাগারে পাঠানো আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এ কে এম আক্তারুজ্জমান আকতার, ফজলুর রহমান, সাহাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, আজিজুর রহমান শাহীন প্রমূখ। আসামিরা ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
আদালতে রাষ্ট্রেপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা ও গোলাম হাসনাইন এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে নীলফামারির সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে শেখ হাসিনার ট্রেনবহরটি প্রবেশের মূহূর্তে হামলা করা হয়। স্টেশনে ট্রেনবহর যাত্রাবিরতি করলে আবারও হামলা হয়। ফলে দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এই মামলার আসামি করা হয়।
এই মামলায় পুলিশ কোন স্বাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। কিন্তু আদালত পুলিশের সেই রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল মোট ৫২ জজনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। যার বর্তমান মামলা নম্বর এসটি ৪২/৯৭। গেল ২৫ বছরে চার্জশিটভুক্ত ৭ আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন।
Leave a Reply