বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি ধনীদের হয়ে গেছে মন্তব্য করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, গরিব মানুষের ভাগ্যের কথা এই রাষ্ট্র কখনও চিন্তা করে না।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ: নিরাপত্তা বীমার প্রয়োজনীয়তা, আলাদা তহবিল গঠন ও পরিচালনা’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে এ তিনি এ কথা বলেন।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ধনীদের তেলে মাথায় কত তেল দেওয়া যায় তা আমরা সড়ক পরিবহনের ক্ষেত্রে যে আইনগুলো রয়েছে তার ভেতর স্পষ্টভাবে দেখতে পাই। এদিকে আমাদের আইন সভায় ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য যেভাবে বাড়ছে সেখানে আইনের প্রয়োগ কীভাবে হবে।’
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আলাদা তহবিল গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণে আলাদা তহবিল গঠন করার ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করছি। কারণ, এই তহবিল দুর্নীতির আরও একটি নতুন সংযোজন হবে। যারা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত হন তাদের কথা মনে রেখে কল্যাণ ফান্ড গঠন করার দায়িত্ব কার সেটা ভাবতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণটা আসলে কে দেবে? মালিক, সরকার না বীমা কোম্পানি কোথা থেকে আসবে সেটা ভাবার সময় এসেছে।
ঋণ খেলাপি প্রসঙ্গে প্রাক্তন এই মানবাধিকার কমিশনার বলেন, ‘একজন মন্ত্রী যখন বলেন ঋণখেলাপির সবাই খারাপ নয়- এই কথা তিনি কিভাবে বলেন? সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে মানুষের টাকা মেরে এই সব বড় বড় লোক ঋণ খেলাপি হচ্ছে। আবার তারাই নাকি ভালো লোক- এটা হাস্যকর’।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী তার বক্তব্যে বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আলাদা তহবিল ও নিরাপত্তা বিমা প্রয়োজন। কারণ আমরা যখন বীমা কোম্পানিগুলোর কাছে বীমা করি, দুর্ঘটনার পর এসব টাকা বীমা কোম্পানিগুলোর কাছে নিতে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। তাই শিগগিরই সড়ক দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণে আলাদা তহবিল গঠনের দাবি জানাই’।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কে কীভাবে ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করবে এটা কোথাও ভালোভাবে বলা নেই। এদিকে সড়ক পরিবহন আইনের এমন ফাঁক ফোকর রাখা হয়েছে যাতে গরিব লোক টাকা না পায়।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন- এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোল টেবিল বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড: সৈয়দ নাইমুল ওয়াদুদ, অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. মোয়াজ্জেম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply