আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::রাশিয়া বলেছে, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নতুন নিষেধাজ্ঞা তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনাকে একটি বিপজ্জনক পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মালদ্বীপ সফররত রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
একই সাথে রাশিয়া ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছে। অন্য দিকে ইরানের বিরুদ্ধে জোট গড়ার চেষ্টার অংশ হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ভারত সফরে এসেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ও তার কার্যালয় এবং দেশটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত করে ল্যাভরভ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের সিনিয়র কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে টার্গেট করে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন তা খুবই উদ্বেগজনক। তার মতে, বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ২০০৩ সালের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আক্রমণ চালানোর জন্য একটি অজুহাত খুঁজছিল।
উল্লেখ্য, ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার দাবি করে ২০০৩ সালে দেশটিতে আগ্রাসন চালানোর নির্দেশ দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ। সেটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সে সময় ওয়াশিংটন দাবি করেছিল, ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে। কিন্তু ইরাক দখলের পর এ ধরনের কোনো অস্ত্র সেখানে পাওয়া যায়নি। ল্যাভরভ বলেন, যুদ্ধের পরিণতি কি হয় তা আমরা সবাই জানি। ২০০৩ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ ঘোষণা করে। কিন্তু গত ১৬ বছর ধরে আমরা সে গণতন্ত্রের স্বরূপ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা, তার কার্যালয় ও ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির আট শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রতিহত করবে রাশিয়া : ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞাকে ‘বেআইনি’ উল্লেখ করে রাশিয়া বলেছে, তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন প্রেসিডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে নতুন কিছু করতে চাইলে মস্কো তা প্রতিহত করবে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকোভ এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
একটি রুশ বার্তা সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এ নিষেধাজ্ঞা শুধু উত্তেজনাই বৃদ্ধি করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত ইরানের সাথে আলোচনায় বসা। তবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে রাশিয়া কী পদক্ষেপ নেবে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। এর আগে গত সোমবার নতুন এ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আমরা ভেবে দেখেছি এ নিষেধাজ্ঞা বেআইনি।
Leave a Reply