বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

নোটিশ :
Welcome To Our Website...
মিরাকল হলো না, তবে স্বপ্ন দেখাল

মিরাকল হলো না, তবে স্বপ্ন দেখাল

৪০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৪৫। ওই অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ২৫০। এটুকু জানার পর মনে হতেই পারে, বাংলাদেশ তো তাহলে ৪০তম ওভারেও ম্যাচে ছিল। পরিসংখ্যানকে এ কারণেই মাঝে মাঝে এত বোকা ঠেকে। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী বাংলাদেশ যে বহু আগেই ছিটকে গেছে জয়ের পথ থেকে। অস্ট্রেলীয় ধারাভাষ্যকার পর্যন্ত কাঁপা কণ্ঠে বললেন, ‘ক্যান দে পুল অফ আ মিরাকল?’ না হয়নি! হলো না! মিরাকল রোজ ঘটে না। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ৪৮ রানে হারল। তবে এই পরাজয়ও অনেক গর্বের। নতুন দিনের আশার। অস্ট্রেলিয়ার ৫ উইকেটে ৩৮১ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে করল ৩৩৩ । ওয়ানডে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।

 

বাংলাদেশের হারের কারণ হিসেবে অনেক কিছুকেই দাঁড় করান যেতে পারে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে না পারা। ৩৮২ রানের লক্ষ্যে নেমে ৪২ ওভার পর্যন্ত ১০৭টি বল ডট দেওয়া কিংবা সাকিব, তামিমদের কারও নিজেদের ইনিংস বড় করতে না পারা। তবে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি পোড়াবে, এই ম্যাচেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোসাদ্দেকের চোতে পড়া। মাঝের ওভারে উইকেট তুলে নেওয়ার ব্যর্থতা ও স্লগ ওভারে রান আটকানোর কাজটা কেউ করতে না পারার কাছেই যে হারল বাংলাদেশ।

 

৩১ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ৮২ রান নিয়েছে। বাংলাদেশ নিয়েছে ৬৮ রান। ৩০ ওভার পর্যন্ত উইকেট বেশি হারালেও রানে এগিয়ে ছিলেন সাকিব-তামিমরাই। কিন্তু উইকেট ধরে রেখে শেষে ঝড় তোলার কাজটা দুর্দান্তভাবে করেছে অস্ট্রেলিয়া। ৪১ থেকে ৪৬—এই ৬ ওভারে ৯৬ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নারের শুরু করা কাজটা ম্যাক্সওয়েল শেষ করেছেন দুর্দান্তভাবে। মাত্র ৩৭ বলে ২৫০ থেকে ৩৫২ করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া।

 

ওদিকে বাংলাদেশ ৪১তম ওভারে তুলতে পেরেছে ৪ রান। ৪২ থেকে ৪৪ ওভারে ১৫, ১৩ ও ১২ রান এলেও সেটা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কমই ছিল। পরের ওভারে রানটা আরও কমে এল, এল ১১ রান।

 

বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে ইনিংসের শুরুতেই। বল হাতে চমক দেখানো সৌম্যের ব্যাটের দিকে চেয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু চতুর্থ ওভারেই অদ্ভুতভাবে রান আউট হয়ে ফিরেছেন সৌম্য (১০)। রান রেট ছয়ের নিচে নামতে না দিয়ে ভালোই করছিলেন সাকিব ও তামিম। কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম বলে মিস টাইমিং করে সাকিব (৪১) ফিরতেই বাংলাদেশ দল ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে। মিচেল স্টার্কের বল স্ট্যাম্পে টেনে এনে তামিমও (৬২) ফিরে গেছেন ইনিংসের অর্ধেক পেরোনোর আগেই।

 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৪ রানের দুর্দান্ত সেই ইনিংসের সুবাদে লিটনকে ঘিরে আশা জাগছিল বাংলাদেশ। বেশ কয়েকটি দারুণ শট খেলে লিটনও ভরসা দিচ্ছিলেন। অ্যাডাম জাম্পার একটি রংওয়ান সেটাও কেড়ে নিল (১৭৫/৪)। বাংলাদেশ তখনো ২০৭ রান দূরে, বল হাতে ছিল ১২৪টি।

 

ম্যাচটিকে টি-টোয়েন্টি ধরে নিয়ে খেলতে পারলে বাংলাদেশের পক্ষে এ ম্যাচ জেতা সম্ভব ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ দলে যে নেমেই ছক্কা হাকানোর মতো পিঞ্চ হিটার নেই। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ তাই সময় নিয়ে সেট হলেন আরও কিছুক্ষণ। সেট হতে হতেই ৪০ ওভার শেষ হয়ে গেল। ৪২তম ওভারে এসে নিজের ৩৩তম প্রথম ছক্কা মারলেন মাহমুদউল্লাহ। সে ওভারেই এল দ্বিতীয় ছক্কা। মাহমুদউল্লাহ চার-ছক্কার দায়িত্ব বুঝে নেওয়ায় খোলসে ঢুকে গেলেন মুশফিক। অলৌকিক কিছু হবে কি না সে আলচনাও চলছিল। ৪৬তম ওভারের দুই বলে সে আলোচনাও শেষ হয়ে গেল।

 

বিশ্বকাপে আরও ৩ ম্যাচ বাকি। সে তিন ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজকের হার অন্তত বাংলাদেশকে সে তিন ম্যাচ নিয়ে আশা দেখাচ্ছে। বিশ্বকাপের সেরা পারফরমার সাকিবের সেরা পারফরম্যান্স ছাড়াই যদি সাড়ে তিন শর বেশি রানের লক্ষ্য তাড়া করার সাহস দেখানো যায়, তবে তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্নও দেখা যায়।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আর্কাইভ

June 2019
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

Weather

booked.net




© All Rights Reserved – 2019-2021
Design BY positiveit.us
usbdnews24