হঠাৎ দেখলে মনে হবে কোনো প্রাসাদ দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। শুধু দেয়ালগুলোই টিকে আছে। ভাঙা সেই দেয়ালের ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে উটের মাথা, গরু বা ঘোড়া। কয়েকজন মানুষও দাঁড়িয়ে আছে হাতে হাত ধরে। এক কোনায় বিশাল এক পাখিও দেখলেন মোহাম্মদ আসাদ। করতে চাইলেন সুলুকসন্ধান
তেজগাঁও-মগবাজার ফ্লাইওভারের যে পথে কাকরাইল যায়, সেই অংশের ফ্লাইওভারের নিচে খালি জায়গায় গড়া হয়েছে শিল্পকর্মটি। কাজটি শুরু করেছিলেন টোকাই সোবহান ও টোকাই রফিক।
দেড় বছর ধরে রফিক না আসার কারণে সোবহান এখন একাই কাজ করে যাচ্ছেন।
কেন জিরাফ ঘোড়া
দেয়ালের এক পাশে দুটি জিরাফ। জিরাফ খুব সুন্দর দেখতে। তাই ওদের বানিয়েছেন। তার পরে আছে ময়ূর। জিরাফের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে একটি ঘোড়া। এই ঘোড়াটা না দেখেই বানিয়েছেন। সোবহানের কথামতো রফিক সবই বানাতেন। এরপর গরুটি দেখিয়ে বললেন, যখন বানিয়েছেন তখন আরো সুন্দর ছিল দেখতে।
মানুষগুলোর মধ্যে বাঁ দিকের প্রথমটা বানিয়েছেন সোবহান। পরেরটা বানিয়েছেন এক বুড়ো লোক। তিনি সোবহানদের সঙ্গে ছিলেন কিছুদিন। তারপর আছে বাঘ, হাতি। কোনায় দাঁড়িয়ে আছে বড় একটা পাখি। সোবহান পাখিটার কাজ জানালো ঘর পাহারা দেওয়া। তারপর দেখলাম এক জেলে বড় একটা মাছ ধরছে। মরুভূমির উটকেও দেখা গেল সোবহানদের কর্মযজ্ঞে।
কাগজপত্র বেচে জীবন চালাত
সোবহান ঢাকায় আসেন ছোটবেলায় এরশাদের আমলে। তখন কাগজপত্র টোকাতেন আর সেগুলো বেচে জীবন চালাতেন। সেই থেকেই তিনি টোকাই। টোকাই সমিতিতে নামও লিখিয়েছেন। কাজ পেয়েছেন মগবাজার ফ্লাইওভারের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে। কাজ করছেন এখানে তিন বছর ধরে। বাড়ি বরগুনা জেলার আমতলী থানায়। স্ত্রী আর মেয়ে থাকে খুলনায়। স্ত্রী বাসাবাড়িতে কাজ করেন। মেয়ে মাদরাসায় পড়ে। বিয়ে নিয়ে লম্বা এক ঘটনা আছে সোবহানের। বিয়ে করেছেন সাত বছর হলো। মেয়েটা কাজ খুঁজতে ঢাকায় এসেছিল। একসময় চিন-পরিচয় হয়। তারপর মতের মিল হওয়ায় মগবাজার কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করে সংসার গড়েন। এখন মাসে মাসে টাকা পাঠান সোবহান। বউ এসেও মাঝেমধ্যে টাকা নিয়ে যান।
Leave a Reply