নিউইয়র্ক : বাংলা একাডেমির ‘সৈয়দ ওয়ালিউল্যাহ সাহিত্য পুরস্কার’ প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বললেন, ‘কোন পুরস্কারই বিতর্কের উর্দ্ধে থাকে না। ২০১১ সালে লন্ডনে বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে এই পুরস্কার প্রবর্তিত হলেও এটি কারা পাবেন, কী যোগ্যতার বলে পাবেন তার কোন সুস্পষ্ট নীতিমালা ছিল না। গত ডিসেম্বরে দায়িত্ব গ্রহনের পর আমি এমন কোন প্রক্রিয়া অবলম্বন করিনি যা বিতর্কের অবতারণা করতে পারে। শুধু তাই নয়, এই পুরস্কারেরও নীতিমালা তৈরী করেছি।’ উল্লেখ্য, প্রবাসে থেকে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্যে শুধুমাত্র প্রবাসী লেখকদের জন্যে এই পুরস্কার (৫০ হাজার টাকাসহ) প্রতি বছরই প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোন লেখক তা পাননি। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনের উত্তর আমেরিকা সংস্করণের পক্ষ থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় । তার জবাবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আরো বলেন, বাংলা একাডেমির আরো অনেক পুরস্কার রয়েছে। সেগুলো নিয়েও মাঝেমধ্যেই প্রশ্নের অবতারণা হয়। এ সময় খ্যাতনামা ওপন্যাসিক সেলিনা হোসেন উল্লেখ করেন, ‘দীর্ঘ ৩৪ বছর চাকরি করেছি বাংলা একাডেমিতে। আমি কখনোই বাংলা ভাষার লেখক-সাহিত্যিকদের মধ্যে বিভাজনে বিশ্বাসী ছিলাম না, এখনও নেই। তাই বাংলা একাডেমির মূলধারার পুরস্কারের সাথেই প্রবাসের লেখকদেরকেও যুক্ত করার পক্ষে আমি। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সৈয়দ ওয়ালিউল্যাহ সাহিত্য পুরস্কারের সাথে নগদ ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। অথচ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের সাথে দেয়া হয় নগদ দু’লাখ টাকা করে। এভাবেই প্রবাসের লেখকদেরকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে বা বৈষম্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। এটা উচিত নয়।’
নিউইয়র্কে ১৪ জুন থেকে চারদিনের বইমেলা ও বাংলাদেশ উৎসব’র আলোকে ১৩ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে হোস্ট সংগঠন ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’র সংবাদ সম্মেলনে বইমেলার অতিথিরা নানা ইস্যুতে কথা বলেন। মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, নিউইয়র্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী অধ্যুষিত সিটিসমূহে বাংলা একাডেমির লাইব্রেরী অথবা সেলস সেন্টার খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এব্যাপারে প্রবাসীদের সহযোগিতা কাম্য।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, বইমেলার আহবায়ক ড. নজরুল ইসলাম চারদিনব্যাপী মেলার সামগ্রিক প্রস্তুতি উপস্থাপন করেন। এই মেলা কমিটির অন্যতম সংগঠক লেখক-সাংবাদিক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন চ্যানেল আই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, লেখক-সাহিত্যিক আনিসুল হক এবং আবুল হাসনাত, প্রকাশক মিসবাউজ্জামান, বইমেলার সাবেক আহবায়ক ফেরদৌস সাজেদীন এবং বইমেলার প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সিইও বিশ্বজিৎ সাহা। সংবাদ সম্মেলনে বইমেলার অন্য অতিথিরাও ছিলেন।
এ সময় আরো জানানো হয় যে, সামনের বছর থেকে বড় পরিসরে মেলার আয়োজন করা হবে। উল্লেখ্য যে, এবারের মেলায় খ্যাতনামা শিশু সাহিত্যিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগর এবং প্রবাসে সাহিত্য-সংস্কৃতি সেবায় নিরন্তরভাবে সহযোগিতাকারি ওয়ালেদ চৌধুরীকে ‘আজীবন সম্মাননা’ প্রদান করা হবে।
Leave a Reply