কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে প্রচণ্ড শীত। সূর্যের দেখা মিলছে না। শিরশির বাতাস, আর কনকনে শীতে গরম কাপড় না কিনলে যেন হচ্ছে না। তাই রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতে গরম কাপড় কিনতে ভিড় বাড়ছে। মানুষ নিজেদের চাহিদা মতো পোশাক কিনছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শৈত্য প্রবাহ ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া আরো কয়েকদিন চলতে পারে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলিস্তান, বঙ্গমার্কেট, ফুলবাড়িয়া মার্কেট ও এই মার্কেটগুলোর সামনের ফুটপাতগুলোতে গরম পোশাকের দোকানগুলোতে মানুষের জটলা দেখা যায়। চাহিদা মতো মানুষ বিভিন্ন ধরনের গরম পোশাক যেমন সোয়েটার, কম্বল, জ্যাকেট, হাত পা মোজা, মাফলার ও কানটুপি কিনছে।
গুলিস্থানের হকার্স মার্কেটের সামনের ফুটপাতে দোকানদার শাহজাহান বলেন, “আমরা শীতের পোশাক এ মাসের শুরু থেকেই বিক্রি করছি। কিন্তু প্রথম দুই সপ্তাহে শীত তেমন না থাকায় বিক্রয় ও তেমন হয় নাই। কিন্তু গত দু’দিন থেকে শীত বেশি পড়ায়। প্রচুর পরিমাণে গরমের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এই দিনে এতটা বিক্রি আমরা করতে পারিনি। গত দুই সপ্তাহে যত টাকা বিক্রি করেছি এই দু’দিনে তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “মানুষ শুধু শীতের কাপড় কিনছে। পাতলা গেঞ্জি, প্যান্টও আমাদের কাছে আছে কিন্তু মানুষের চাহিদা শুধু গরম কাপড়েই।”
যাত্রাবাড়ী থেকে গরম পোশাক কিনতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত দু’দিন থেকে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। বাহিরে বের হতে পারছি না। তাই শীতের পোশাক কিনতে এসেছি। গতবছর যেগুলো কিনেছিলাম সেগুলোও আছে। তবে এ বছর নতুন কিছু কিনব।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গত বছর যে জামাটি কিনেছিলাম পাঁচশো টাকায়। সেই একই জামা এখন দাম চাচ্ছে ২ হাজার টাকা। পনেরশো টাকা ঠিক দিচ্ছে।”
তিনি বলেন, “হঠাৎ করে প্রচুর শীত পড়ায়। গরম কাপড়ের প্রতি মানুষের চাহিদা বেড়ে গেছে। সবাই গরম কাপড় কিনতে এসেছে, প্রচুর পরিমাণ ভিড়। হয়তোবা এই কারণেই দোকানিরা দ্বিগুণ দাম হাঁকাচ্ছেন।”
গুলিস্তানে শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন শনিরআখড়ার বাসিন্দা সাজেদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জুলেখা বেগম। তারা জানান, “শীত বেড়ে যাওয়ায় নিজেদের পাশাপাশি তাদের শিশুদের জন্য গরম পোশাক কিনতে এসেছেন। তবে গরম পোশাকের পাশাপাশি কম্বল কিনবেন তারা।”
তারা অভিযোগ করে বলেন, “যে কম্বল দুইশো টাকা দিয়ে গত বছর কিনেছিলাম সেই কম্বলের দাম চারশো টাকা করে নিচ্ছে। আবার একটা জ্যাকেটের পনেরশো টাকার নিচে দিচ্ছে না। এরা যেন একটা মগের মুল্লুক পেয়ে বসে আছে।”
বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে গুলিস্তানের কম্বল বিক্রেতা শাহজাহান মিয়া বলেন, গত দু’দিন থেকে শীত একটু বেশি পড়ায় বিক্রি ভালো হচ্ছে। কম্বলের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দুইশো থেকে দশ হাজার টাকা দামের কম্বল আমার কাছে আছে।”
গত বছরের তুলনায় এবছর দাম বেশি না কম জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, “যত দিন যাবে তত দাম বাড়বে। এটা নিয়ম হয়ে গেছে। আমাদের বেশি দামে কিনেতে হয়। তাই আমাদেরকে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আমরা ব্যবসা করি, কষ্ট করি আমাদের তো কিছু লাভ থাকা লাগবে তাই না।”
তিনি আরো বলেন, “একটু দাম বেশি নেব না? আমাদের যখন লস হয় তখন আমাদেরকে কে দেখে? তখন তো আমাদেরকে কেউ খোঁজ নিতে আসে না; আমরা না খেয়ে আছি না মরে গেছি।”
ব্যবসায় লাভ-লস আছে এটা মেনে নিয়েই তো আপনারা ব্যবসা করছেন তাহলে মানুষদেরকে ঠকাচ্ছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা যে দামে বিক্রি করছি সেই দামেই বিক্রি করব কেউ কিনলে কিনবে না কিনলে নাই।”
Leave a Reply